শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবছর ১৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী ‘গ্লোবাল হ্যান্ড ওয়াশিং ডে’ পালন করা হয়। বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি এবং জনগণকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করে রোগ প্রতিরোধ করার উদ্দেশে এ দিবসটি প্রতিবছর পালিত হয়। সবাইকে হাত ধোয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা ও হাত ধোয়ায় উদ্বুদ্ধ করাই এ দিবস পালনের লক্ষ্য। দিবসটির সূচনা ২০০৮ সাল থেকে। প্রতিবছর একটি প্রতিপাদ্য থাকে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সকলের হাত সুরক্ষিত থাক’। সুস্থ থাকার প্রাথমিক কাজই হলো খাবার গ্রহণ করার আগে ভালোভাবে সাবান বা অন্য যে কোনো অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করে সুন্দরভাবে হাত ধোয়া। অনেকেই এ ব্যাপারটা জানলেও বাস্তবে অনুসরণ করেন কম। আবার কেউ কেউ হয়তো এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন।
হাত ধোয়া কর্মসূচি নতুন কিছু নয়। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ১৮০০ সালে। ভিয়েনার একটি হাসপাতালে কাজ করতেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ইগনাল সেমেলউইজ। এ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে মাতৃমৃত্যুর হার হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। আতঙ্কিত রোগীরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যেতে থাকেন। ডা. সেমেলউইজ এর কারণ খুঁজতে লাগলেন। তিনি অনুসন্ধান করে দেখলেন, নবীন চিকিৎসকরা অ্যানাটমি ক্লাসে মৃতদেহ ব্যবচ্ছেদ করে হাত ভালোভাবে না ধুয়েই প্রসূতি ওয়ার্ডে রোগীদের চিকিৎসা করছেন। তিনি মতামত দিলেন, এভাবে অপরিষ্কার হাত দিয়ে রোগীদের সংস্পর্শে আসায় সংক্রমণ বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যু হার। তিনি উদ্যোগ নিয়ে হাত ধোয়া কর্মসূচি শুরু করেন, ফলে জীবাণু সংক্রমণ কমে যায় ও মাতৃমৃত্যুর হার ৫ গুণ কমে আসে। ডা. সেমেলউইজের এ কর্মসূচি হাসপাতালে হাত ধোয়ার গুরুত্বকেই প্রমাণ করে। রোগ প্রতিরোধে হ্যান্ড ওয়াশিং বা হাত ধোয়ার ভূমিকা এখন শুধু হাসপাতালে সীমাবদ্ধ নয়, বরং স্কুল, কলেজ, রেস্তোরাঁ সর্বত্র স্বীকৃত।