অনেক মানুষ, ব্যাপক কোলাহল! এরই ভেতর মাছ বাজারের কোণায় মেঝের ওপর রাখা এক ঝুড়ি ইলিশ বিক্রির ডাক তুললেন চশমা পরা এক ব্যক্তি। তিনি অন্য ব্যবসায়ীদের বলা দাম ছন্দে-ছন্দে সুর তুলে বলছিলেন: 'চৌদ্দ শ… চৌদ্দ শ বিশ… সাড়ে চৌদ্দ শ…।'
নিলামকারীর সামনে দাঁড়ানো ব্যবসায়ীরা যেন ইলিশ মাছের মতোই একজন আরেকজনের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে। বরফে মোড়ানো ইলিশের বড় সাদা বাক্স বোঝাই রিকশা-ভ্যানগুলো ভিড় কাটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। চাকার নিচে পা পড়ার আশঙ্কা থাকলেও সেদিকে যেন কারও খেয়াল নেই।
নিলামকারী ব্যক্তিটি সম্ভবত পঞ্চাশোর্ধ্ব। খানিক বাদে তার ডাক শেষ করে সঙ্গীদের ইলিশ ওজন করতে বললেন। পাল্লায় ২৭ কেজি দেখাতেই চশমাপরা ভদ্রলোকটি লাল টালিখাতা খুলে কী যেন লিখে নিলেন।
ইলিশগুলো শেষ পর্যন্ত বিক্রি হলো কেজিপ্রতি এক হাজার ৪২০ টাকায়। এটিই সর্বোচ্চ দর। এক কুলি এসে ইলিশের ঝুড়িটা নিয়ে মূহূর্তেই মানুষের ভিড়ে হারিয়ে গেলেন।
প্রায় একই দৃশ্য আবার দেখা গেল যখন নিলামকারী আরও এক ঝাঁক ইলিশের জন্য ডাকতে শুরু করলেন। পার্থক্য—এখনকার মাছগুলো সংখ্যায় বেশি হলেও আকারে ছোট।
কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা দাম হেঁকে এবার নিলাম শুরু করেন তিনি।
দৃশ্যটি ঢাকার অন্যতম বড় মৎস্যকেন্দ্র কারওয়ান বাজারের। সূর্য ওঠার আগেই বাজারটি ভীষণভাবে প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠে। এখানে এলে দেখা যায় বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরীর বাসিন্দাদের জেগে ওঠার দৃশ্য।