এক বছর আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৫ এর কার্যালয়ে ছেলের জন্মসনদ সংগ্রহ করেন যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচার বাসিন্দা সৈয়দ খোরশেদ আলম। শিশুর স্কুলে ভর্তির জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক হওয়ায় সেটি নিয়ে যান তিনি। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, এই জন্ম সনদ ‘ভুয়া’।
ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছে ধানমন্ডির ৪ নম্বর রোডের মেহেদী হাসান (৭)। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক। গত জুন মাসে দক্ষিণ সিটির অঞ্চল-১ থেকে ছেলের জন্ম নিবন্ধন করিয়ে অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন করেন মেহেদীর বাবা মোজাম্মেল হক। কিন্তু তার এ আবেদন গ্রহণ করেনি ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। পরে তারা এ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, ‘দক্ষিণ সিটির এই জন্মসনদের তথ্য জাতীয় সার্ভারে নেই।’
নাগরিক সেবার নামে গত প্রায় এক বছর ধরে এমন ৮৭ হাজার ‘ভুয়া’ জন্ম নিবন্ধন সনদ বিতরণ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এসব সনদের কোনোটির সঙ্গেই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন) সার্ভারের তথ্যের মিল নেই। যারা ডিএসসিসি থেকে জন্মসনদ নিয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এসব সনদে দেশে কোনো ধরনের নাগরিক সেবা মিলছে না।
এদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) জন্ম নিবন্ধন সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বছরখানেক আগে স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, জন্মসনদ বিতরণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সম্প্রতি আবার আগের মতো ডিএনসিসির আঞ্চলিক অফিস থেকে জন্মসনদ বিতরণের নির্দেশনা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ কারণে এখন জন্ম নিবন্ধন আবেদন ও সনদ বিতরণ বন্ধ রয়েছে। এতে নাগরিক ভোগান্তি আরও বাড়ছে।