গত সাত বছরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় অন্তত ১০টি প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যা টাকার অঙ্কে ছাড়িয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তবে এর মধ্যে গত তিন বছরে নানা প্রকল্প দেখিয়ে ১৭৯ কোটি টাকা সরাসরি খরচ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের নামে। শুধু সভা-সেমিনার, স্কুল-কলেজ পরিদর্শন, টিভিসি, চলচ্চিত্র নির্মাণ, পত্রিকা-টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন বাবদ ব্যয় করা হয়েছে এসব টাকা। তবে তথ্য বলছে, নামকাওয়াস্তে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এই টাকা ব্যয়েও নেওয়া হয়েছে চতুরতার আশ্রয়। সাধারণত ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত যে কোনো প্রকল্প মন্ত্রণালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নিতে পারে। সেই সুযোগ নিয়েই চারটি প্রকল্পে ভাগ করে এসব টাকা খরচ করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের নামে।
তথ্য বলছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত কোনো বিনিয়োগ প্রকল্প হলে সেই প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভার (একনেক) অনুমোদন নিতে হয় না। এসব প্রকল্প সাধারণত মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনামন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়। পরিকল্পনামন্ত্রী চাইলে এসব প্রকল্প অনুমোদন হয়। তবে ৫০ কোটি টাকার ওপরে প্রকল্প ব্যয় হলে সেই প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় একনেকে। তথ্য বলছে, গত চার বছরে ৫০ কোটি টাকার নিচে এমন পাঁচটি প্রকল্প হাতে নেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং সব প্রকল্পতেই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে লেখা হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন। এসব প্রকল্পের কাজ মন্ত্রী-সচিবের অভিপ্রায় অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হয়।
২০২২ সালের ১ জানুয়ারি হাতে নেওয়া হয় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন প্রকল্প। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব হাতে নেয়। এতে খরচ ধরা হয় ২১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। নথি বলছে, প্রকল্পের আলোকে বিভাগীয় পর্যায়ে সভা-সেমিনার, ৭ মার্চের ভাষণ সর্বজনবিদিত করা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন, জাতীয় সংগীত এবং জাতীয় পতাকার মর্যাদা সমুন্নত রাখা, প্রচার, ফটোগ্রাফি, ডকুমেন্টেশন (টেলিভিশন, পত্রিকা ও অন্যান্য মাধ্যমে বিজ্ঞাপন এবং টিভিসি তৈরি)। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষের দিকে।