জম্মু-কাশ্মীরের ভোট নরেন্দ্র মোদির অগ্নিপরীক্ষা

প্রথম আলো সৌম্য বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯:৫১

১০ বছর পর জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার ভোট হচ্ছে। উৎসাহ ও উদ্দীপনায় ভূস্বর্গে খই ফোটা ফুটছে। তিন দফার ভোটের দুই দফাই ঝঞ্ঝাটহীন। ১ অক্টোবর তৃতীয় দফার ভোট। ৮ অক্টোবর ফল ঘোষণা। সে নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। হবেই তো। একেক দলের ঝুঁকি ও বাজি একেক ধরনের। হার-জিতের ওপর অনেক কিছুই নির্ভরশীল।


দুই দফাতেই জম্মুতে ভোট পড়েছে উপত্যকার চেয়ে ঢের বেশি। যেমন জম্মুর পুঞ্চ, রাজৌরি, রেসাই জেলার ১১ আসনে ভোট পড়েছে গড়ে ৭৩ শতাংশ, সেখানে উপত্যকার শ্রীনগর, বদগাম ও গান্দারবলের ১৫ কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৫১ শতাংশ! প্রথম দফার ভোটের ছবিও এমনই। দুই দফার এই ৫০ কেন্দ্রের মধ্যে শ্রীনগরের ৮ আসনে ভোট পড়েছে ৩০ শতাংশের কম! ভোটের হারের এই বিস্তর ফারাকের অর্থ কী, তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে সবাই। যে যার নিজের মতো করে অর্থ খুঁজছে, বিশ্লেষণ করছে; বুঝতে চাইছে—কেন শ্রীনগরের মানুষ ভোট নিয়ে এত উদাসীন।


এই খানাতল্লাশি বা বিশ্লেষণের একটা কারণ হতে পারে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী হানা। কয়েক মাস ধরে বেশির ভাগ সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ ঘটছে জম্মুর কিশতোয়ার, রাজৌরি, পুঞ্চ, ডোডা এলাকায়। আক্রমণের লক্ষ্য অবশ্যই সেনাবাহিনী। অনেক দিন ধরেই সন্ত্রাসবাদীরা এমন কিছু করছে না, যাতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, জনজীবন ব্যাহত হয়, কারফিউ জারি হয়, অহেতুক সেনাতল্লাশি শুরু হয় বা পর্যটনে ঘা পড়ে।


সাধারণ মানুষের রুজি-রোজগারের ওপর আঘাত জঙ্গিরা হানছে না। পরিযায়ী শ্রমিকদের আক্রমণের মতো ঘটনাও ইদানীং বন্ধ। জঙ্গিদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য সেনাবাহিনী। সেটাও প্রধানত জম্মু এলাকায়। হয়তো এ কারণে হিন্দুপ্রধান জম্মু দৃঢ়ভাবে মোদির পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তেমনটা সত্যি হলে কংগ্রেস-এনসি জোটের পক্ষে সেটা হবে প্রবল ধাক্কা। মনে রাখা দরকার, লোকসভা ভোটে জম্মুর দুটি আসনই বিজেপি জিতেছিল।



এই পরিবর্তন জঙ্গিদের দিক থেকে কতটা কৌশলগত, কতটাই–বা সরকারের বজ্র আঁটুনির ফল, তা নিয়ে তর্ক থাকলেও এর একটা নতুন ব্যাখ্যা শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নাকি মন বদলেছে। ব্যাখ্যাটা নেহাত অযৌক্তিক নয়। ক্রমাগত দমন–পীড়নে হুরিয়ৎ কনফারেন্স দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়েছে। জামায়াতে ইসলামিও ‘অর্থহীন ভোট বয়কটের’ রাস্তা থেকে সরে এসেছে। সরকারও তাদের ভোটে দাঁড়াতে উৎসাহিত করেছে।


৩০ বছর পর জামায়াতে ইসলামি এই প্রথম ভোটে অংশ নিচ্ছে স্বতন্ত্র হিসেবে, সংগঠন যদিও নিষিদ্ধ। সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত স্থানীয় লোকজনও নাকি বুঝছে, মূল স্রোতে ফেরত আসা জরুরি। মানসিকতার এই পরিবর্তনের প্রতিফলন ইভিএমে কীভাবে ঘটবে, কেউই সে বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত নন। আপাতত মাপকাঠি একটাই। গত লোকসভা ভোটে বারামুল্লা কেন্দ্রে স্বতন্ত্র ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার রশিদের জয় ও ওমর আবদুল্লাহর পরাজয়। জেলে থেকেও রশিদ জিতেছিলেন। ব্যবধান দুই লাখের বেশি!


এ কারণে মনে করা হচ্ছিল, এবার উপত্যকায় হইহই করে ভোট পড়বে। জম্মুর চেয়ে বেশি। অথচ হলো উল্টো। এই বিস্ময়ের উত্তর হয়তো পাওয়া যাবে ফল ঘোষণার পর।


জম্মুর ভোটে মূল লড়াই বিজেপির সঙ্গে ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও কংগ্রেস জোটের। বাকিরা এলেবেলে। উপত্যকার লড়াই আবার বহুমুখী। এনসি-কংগ্রেস জোট ছাড়া রয়েছে পিডিপি। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক হলেও তারা আলাদা লড়ছে এনসির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায়। লোকসভা ভোটে উপত্যকায় প্রার্থী না দিলেও বিধানসভা ভোটে বিজেপি লড়ছে ২০ আসনে। আর রয়েছেন অগুনতি জোরালো স্বতন্ত্র প্রার্থী, যাঁদের কেউ জামায়াতের, কেউ ইঞ্জিনিয়ার রশিদের দল আওয়ামী ইত্তেহাদ পার্টির (এআইপি)। এ ছাড়া আছে বিজেপির মদদে জন্ম আলতাফ বুখারির আপনি পার্টি ও গুলাম নবী আজাদের আজাদ পার্টি। জোর প্রচার, তাঁদের মধ্যে যাঁরা জিতবেন, তাঁদের সমর্থন নিয়েই বিজেপি সরকার গড়ার চেষ্টা করবে। এ কারণে রশিদ, আজাদ, বুখারি ও জামায়াতকে বলা হচ্ছে ‘বিজেপির বি টিম’।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us