জুন-জুলাই মাসেই মূলত বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য যান আমাদের দেশের শিক্ষার্থী-গবেষকেরা। কিন্তু এ বছর ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের সময় বন্ধ ছিল অনেক দূতাবাসের কার্যালয়। কোনো কোনো দূতাবাসের কার্যক্রম এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি। তাই ভিসা, আগামী সেশনের ভর্তি, ফান্ডিংসহ নানা বিষয়ে সমস্যায় পড়েছেন ভিনদেশে
পড়তে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা।ভিসা–সংক্রান্ত সাক্ষাৎকারে সমস্যা
জুলাই মাসের শুরু থেকেই বিভিন্ন দূতাবাস তাদের ভিসা কার্যক্রম সীমিত করে ফেলেছিল। ফলে যাঁরা আগামী সেশনে ভর্তির জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তাঁদের অনেকেই আবেদন করার সুযোগ হারিয়েছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন সোনিয়া সুলতানা। শোনালেন তাঁর অভিজ্ঞতা, ‘১৯ জুলাই আমার যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার ইন্টারভিউ ছিল। এদিকে তখনই ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হলো। খুব সমস্যায় পড়েছিলাম। ২৬ জুলাই আবার তারিখ পেলাম। কিন্তু এরপর সব ভিসা ইন্টারভিউই বাতিলের ঘোষণা আসে। অনেক ঝামেলার পর ১৯ আগস্ট ইন্টারভিউ দিই। ভিসা পেয়ে টিকিটও কেটে ফেলি। কিন্তু তখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানানো হয়, দেরি হয়ে গেছে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সেশনে ভর্তির সুযোগ আর নেই। আমাকে আগামী জানুয়ারি সেশনে ভর্তি করা হয়েছে। কী আর করা, মাঝখান থেকে বিমানের টিকিটের টাকাটা নষ্ট হলো। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী জানুয়ারিতে মিনেসোটা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স শুরু করব। আমার মতো অনেক শিক্ষার্থীই সেশন মিস করেছেন। অনেকের ফান্ডিং বা বৃত্তি বাতিলের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে শুনেছি।’
বৃত্তি ও ফান্ডিংয়ে সমস্যা
পরিস্থিতির কারণে অনেক শিক্ষার্থী বৃত্তি ও ফান্ডিংয়ের সমস্যায় পড়েছেন। কারও কারও ভর্তির ‘অফার লেটার’ বাতিল হয়ে গেছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর শিক্ষার্থী জেনিফার বিঞ্জালি যেমন বললেন, ‘যুক্তরাজ্যে মাস্টার্সে পড়ার জন্য এ বছরের শুরু থেকে চেষ্টা করছিলাম। সেপ্টেম্বরের সেশন ধরার জন্য সবকিছু তৈরি করেছিলাম। আইইএলটিএস পরীক্ষা থেকে শুরু করে সব ঠিকঠাক চলছিল। অ্যাস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটারও পেয়েছিলাম। কিন্তু ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ঠিকঠাক যোগাযোগ রক্ষা করতে পারিনি। পরে যোগাযোগ করলেও আর উত্তর পাইনি। একই সঙ্গে আমি আমেরিকায় মাস্টার্সের জন্যও চেষ্টা করছিলাম। আগস্ট মাসের শুরুতে দেখলাম, ভিসা দেওয়া বন্ধ আছে। তাই এখন আবেদন করাও বন্ধ রেখেছি। আমার অনেক বন্ধু ভিসার তারিখ পরিবর্তনের কারণে যেতে পারছে না। একটা অস্থির পরিস্থিতির মধ্য আছি। যুক্তরাজ্যের একটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিন হাজার পাউন্ডের একটি বৃত্তির অফার পেয়েছিলাম। সেটাও নিতে পারিনি।’