গ্রুপ ট্যুরে সঙ্গীর অভাব ছিল না, তবু মনে হলো সমুদ্রের সঙ্গে আগে একলা সাক্ষাৎ হোক। কলাতলী বিচে হাজির হলাম একটু ‘একলা’ হওয়ার আশায়। কিন্তু আমি জানতাম না অচিরেই শুরু হবে ‘হুকুম করুন জাহাঁপনা’ সিরিজ। প্রথমে ফটোগ্রাফার, এরপর ঘোড়াওলা...এভাবে আসতেই থাকলেন। ফেলুদা, তোপসে আর জটায়ু বোম্বাইয়ের বোম্বেটেতে আরব সাগরের পাড়ে বসে পাওভাজি খেয়েছেন, বাঙালি তাই সৈকতে পাশে বসে খাবে; এ আর আশ্চর্য কী। তবে না করার পরও যে ঘিরে ধরার প্রবণতা, এই অভ্যাস নিশ্চয়ই ফেলুদা তৈরি করেননি। সঙ্গে জটায়ুকে বলা ফেলুদার কথা, ‘অমন সুন্দর সমুদ্রতট আবর্জনায় ভরিয়ে দিচ্ছেন,’ এটাও আমরা বেমালুম ভুলে গেছি।
কক্সবাজারের এই অভিজ্ঞতার ঠিক এক বছর পর হাজির হয়েছিলাম গোয়াতে। সেই মধ্যদুপুরে, দীর্ঘ ভ্রমণক্লান্তি নিয়ে। কোনোমতে হোটেলে ব্যাগ রেখেই ছুট দিয়েছিলাম সমুদ্রসৈকতে। কেউ বিরক্ত করেনি, লোভনীয় অফার নিয়ে হাজির হয়নি; একাকী নিজের সঙ্গে সৈকতেই কাটিয়ে দিয়েছিলাম ঘণ্টাখানেক।
পর্যটনসেবার অনেক বিচারেই কক্সবাজারের চেয়ে এগিয়ে ভারতের জনপ্রিয় পর্যটনরাজ্য গোয়ার সৈকতগুলো। কিন্তু লিখতে গিয়ে নিজের মতো সময় কাটানোর স্বাধীনতার কথাই মনে পড়ল আগে।
‘ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস’
কক্সবাজারে হোটেল, রিসোর্টের অভাব নেই। প্রতিবার যাওয়ার পরে নতুন নতুন আকাশচুম্বী ভবন আপনাকে চমকে দেবে। ইনানী হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত যখন যাবেন, মনে হবে পুরো এলাকাটাই ‘ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস’। সব সময় এখানে কোনো না কোনো হোটেল বা রিসোর্টের কাজ চলছে, পাহাড় আর সবুজ কমছে পাল্লা দিয়ে। আচ্ছা কক্সবাজারে এই যে প্রতিবছর এত হোটেল রিসোর্ট হয়, তারপরও খুঁজতে গেলে অল্প টাকার মধ্যে মানসম্পন্ন হোটেল পাওয়া যায় না কেন?