ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ। টেকসই উন্নয়ন ও অবকাঠামোবিষয়ক প্রবন্ধকার। তার লেখায় অগ্রাধিকার পেয়েছে টেকসই উন্নয়নের নিরিখে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন পদ্ধতিগত দিক, বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকল্পের ডিজাইন ত্রুটিসহ বিভিন্ন খাতের কারিগরি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামোগত সংস্কার এবং অটোমেশন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশলে স্নাতক অর্জন করেন। টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ তৈয়্যব বর্তমানে সিনিয়র সফটওয়্যার সলিউশন আর্কিটেক্ট হিসেবে ‘ভোডাফোন জিজ্ঞো’ নেদারল্যান্ডস-এ কর্মরত আছেন। বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন বিদায়ী সরকারের উন্নয়ন প্রপঞ্চ ও বর্তমান সরকারের করণীয় প্রসঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাবিদিন ইব্রাহিম
গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আপনার কাজ ছিল আওয়ামী লীগের শাসনের উন্নয়ন ন্যারেটিভকে প্রশ্ন করা। এ সরকারের টানা ১৫ বছরের শাসনামলে তাদের কোন কোন কাজ আমাদের বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে?
গত সরকারের যে রাজনৈতিক প্রপঞ্চ ছিল, তার মধ্যে উন্নয়ন একটি বড় জায়গা করে নিয়েছিল। তাদের উন্নয়নধর্মী প্রপঞ্চ ছিল ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন’। আমরা বাংলাদেশের সম্পদ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ডোমেইনকে বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছি যে প্রপঞ্চটি একটি বিশেষ শ্রেণীকে প্রতিনিধিত্ব করে। এটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে না। আওয়ামী লীগ সরকারের যে উন্নয়ন তা দৃশ্যমান প্রকল্পকেন্দ্রিক। কিন্তু অদৃশ্য উন্নয়ন যাকে আমরা টেকসই উন্নয়ন বলে থাকি সেসব প্রকল্প অনুপস্থিত ছিল। যেমন—বিদ্যুৎ খাতে তৎকালীন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রী ৩৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কোনো মন্ত্রীর এ পরিমাণ অর্থ খরচের সৌভাগ্য হবে কিনা তা আমরা জানি না। কিন্ত আমাদের সবুজ বিদ্যুৎ মাত্র ৫ শতাংশ বা তারও কম। অর্থাৎ বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের পরও আমাদের বিদ্যুৎ খাত টেকসই হয়নি। এটা একটি সাধারণ উদাহরণ। আমরা যদি শিক্ষা খাতের দিকে লক্ষ্য করি, শিক্ষাক্রম নিয়ে অনেক এক্সপেরিমেন্ট হয়েছে অথচ প্রায় ১ লাখ শিক্ষকের পদ শূন্য। শিক্ষা খাতের ডিজিটাইলেজন হলো না। মার্ক্স তৈরি, ট্যাবুলেশন, প্রশাসনিক কার্যক্রম ইত্যাদিতে সময় কমিয়ে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষকদের বেশি সময় দেয়া দরকার ছিল। কিন্তু শিক্ষাক্রম বাড়িয়ে সেখানে শিক্ষকদের ব্যস্ত রাখা হলো। আবার শিক্ষক নিয়োগও দেয়া হয়নি। গণপাশের মাধ্যমে শিক্ষার মান নামানো হয়েছে। শিক্ষা খাতে জিডিপির বিপরীতে যে বরাদ্দ তা কমে এসেছে।