ব্যাংকিং খাত নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে থেকেই চলে আসছিল। তবে তা চলছিল অনেকটা সীমিত পরিসরে এবং কিছুটা খণ্ডিত বা অনুমাননির্ভর তথ্যের ওপর ভিত্তি করে।
বিশেষ করে একটি আলোচিত ব্যবসায়ী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা বা ভবিষ্যৎ অবস্থা কী হতে পারে, তা নিয়ে অনেকেই অল্প–বিস্তর বলার চেষ্টা করছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আত্মগোপনে থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং নতুন গভর্নর দায়িত্ব নিয়েছেন। এখন ওই ব্যাংকগুলোর প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ হতে শুরু করেছে এবং শিগগিরই কার্যকরী নীরিক্ষা সম্পন্ন হলে আসল অবস্থা জানা যাবে।
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকগুলো ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে নতুন পর্ষদ গঠন করেছে ব্যাংকগুলোকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, নতুন পর্ষদ কি এই সব রুগ্ণ ব্যাংকগুলোকে সুস্থ করতে পারবে? কী হতে পারে এই ব্যাংকগুলোর ভবিষ্যৎ?
এর মধ্যেই কিছু কিছু তথ্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, পত্রপত্রিকা এমনকি ইলেকট্রনিকস মিডিয়াতেও আসতে শুরু করেছে।
ওই বিশেষ শিল্পগোষ্ঠী এক লাখ কোটি টাকার বেশি লুট করেছে তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্যাংকগুলো থেকে, এমন খবর এখন সবার মুখে মুখে।
কারও মতে, ১ লাখ ২০ হাজার কোটি, আবার কারও কারও মতে, দেড় লাখ কোটি টাকা।
সংখ্যাটি সম্পর্কে এখনো কেউ নিশ্চিত নয়। নামে–বেনামে কোনো টাকা এলেই লুট হয়েছে কি না, হয়ে থাকলে ঠিক কত টাকা লুট হয়েছে, তার প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে কার্যকরী নীরিক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর।
তবে বর্তমানে ওই ব্যাংকগুলো কঠিন সময় পার করছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকের আমানতের টাকা চাহিদামতো ফেরত দিতে পারছে না। এমন কথাও শোনা যাচ্ছে যে, এসব ব্যাংকের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা নিজেদের বেতনের টাকাও সম্পূর্ণ তুলতে পারছেন না।
সম্প্রতি দায়িত্ব পাওয়া ইসলামিক ধারার একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, তাঁদের ব্যাংকের মোট বিনিয়োগের অর্ধেকই নামে–বেনামে নিয়ে গেছে একটি শিল্প গ্রুপ।
যদি কোনো ব্যাংকের মোট বিনিয়োগের অর্ধেকই নামে–বেনামে লুট হয়ে যায় কোনো একটি গ্রুপের দ্বারা এবং তা আদায় না হয়, তাহলে কী হতে পারে ওই ব্যাংকের ভবিষ্যৎ!
আমরা জানি কোনো একটি সময়ে কোনো ব্যাংকের যত আমানত, তার পুরোটা ওই ব্যাংক লোন বা বিনিয়োগ করতে পারে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী একটি অংশ রাখতে হয় সিআরআর এবং এসএলআর হিসাবে।
ব্যাংকগুলো তাদের মোট আমানতের সর্বোচ্চ যে পরিমাণ লোন দিতে পারে বা বিনিয়োগ করতে পারে, তাকে এডি অনুপাত বলে।