কেবল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাই নন, সহকর্মী, এমনকি অধস্তনের কাছ থেকেও খারাপ আচরণ পেতে হয় অনেক সময়। কেউ কথায় ঝাড়েন মনের ঝাল, তো কেউ দেখান অবজ্ঞা ও অবাধ্যতা। অনেক বস তো আবার ব্যক্তিগত রাগ, ক্ষোভ, হতাশা অধস্তনের ওপর ঝাড়ায় সিদ্ধহস্ত। কেউ হয়তো শারীরিক ভঙ্গি নিয়ে কটূক্তি করেন, কেউ আবার নারী-পুরুষের ভেদাভেদ টেনে আনেন কথার মধ্যে। কারও আবার কোনো এক ‘ভুতুড়ে’ কারণে বছরের পর বছর আটকে থাকে পদোন্নতি। বিশ্বজুড়েই রোজকার কর্মপরিসরে দুর্ব্যবহারের শিকার হয়ে থাকেন বহু মানুষ। সব মিলিয়ে ব্যাপারটা দাঁড়ায় এই, কর্মক্ষেত্রে ‘শান্তি’ নামক বস্তুটাই থাকে না। অথচ দিনের বেশির ভাগ সময়ই আমরা কর্মক্ষেত্রে কাটাই। আর তাই সেখানকার অশান্তির প্রভাব যে ব্যক্তিগত আর পারিবারিক জীবনেও পড়বে—সেটাই স্বাভাবিক।
কথায় বলে, ব্যবহারে বংশের পরিচয়। তবে সেই কথাটা মাথায় রেখে কয়জন অন্যের সঙ্গে আচরণ করেন? আচার-ব্যবহারের বেলায় নিজেকে সংযত রাখেন? অন্যের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলেই যে আপনি ‘প্রতিদানে’ ভালো ব্যবহার পাবেন, তেমনটাও সব সময় ঘটে না। আবার, অন্যের খারাপ আচরণের প্রভাবেও অনেকে রাগান্বিত হয়ে পড়েন। চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলতে পারেন কেউ। আপনি এও জানেন নিশ্চয়ই, ‘রেগে গেলেন, তো হেরে গেলেন’। তবে চাইলেই সব সময় সব বঞ্চনাকে তুচ্ছজ্ঞান করে হাসিমুখে এগিয়ে যাওয়াও সম্ভব হয় না। কর্মক্ষেত্রে খারাপ ব্যবহারের শিকার হয়ে অনেকেই ভোগেন দীর্ঘমেয়াদী হতাশা আর আত্মবিশ্বাসহীনতায়। এই রাগ, দুঃখ, হতাশা, ক্ষোভ সামলে কীভাবে কর্মজীবনে নিজেকে একটু ভালো রাখা যায়, তার পাঁচটি ধাপ জেনে নিন আজ।
ধাপ এক
প্রথমে ভেবে দেখুন, কোন কোন বিষয় আপনার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, আর কোনগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কারও স্বভাবই যদি হয় দুর্ব্যবহার করা, আপনি তো আর তাঁকে চাইলেই বদলে ফেলতে পারছেন না, তা–ই না? আবার, আপনার কাজের কোনো ভুল থেকে থাকলে সেটা ঠিক করে ফেলা আপনার নিয়ন্ত্রণে। তাই যেগুলোর ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ আছে, সেখানে ইতিবাচকতা নিয়ে আসুন। নিজের সেরাটা দিন। যাতে অন্য কেউ আপনার কাজ নিয়ে কিছু বলতে না পারে। এরপরও যদি কেউ কথা শোনান, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত সমস্যা, চারিত্রিক দুর্বলতা।
ধাপ দুই
সাধারণত দেখা যায়, খারাপ আচরণের একটা ধারা থাকে। কোন পরিস্থিতিতে একজন মানুষ আপনার সঙ্গে কোন ধরনের দুর্ব্যবহার করছেন, কাজ করতে করতে আপনি তা বুঝে ফেলবেন একসময়। প্রায়শই ঘটতে থাকা এই ‘চিত্রনাট্য’ আপনার জানা হয়ে গেলে আপনি সহজে সেই পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলাতে সক্ষম হবেন। তাই ‘পূর্বানুমান’ অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত রাখুন।