ক্যানসারের কিছু উপসর্গ আছে, যেগুলো নিয়ে কথা বলতে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ও লজ্জায় ভোগেন অনেক নারী, বিষয়টা গোপন রাখার চেষ্টা করেন। স্বজনদের কাছে খোলাসা করে কিছু বলেন না, চিকিৎসকের কাছেও যেতে চান না। ফলে রোগ শনাক্ত হতে অনেক দেরি হয়ে যায়। এসব কারণে নারীদের ক্যানসার চিকিৎসায় ভালো সুফল পাওয়া যায় না। অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণেও অনেক নারী চিকিৎসা নিতে দেরি করেন। অথচ নারীদের বেশির ভাগ ক্যানসারই ঠিক সময়ে শনাক্ত হলে সফলভাবে আরোগ্য করা সম্ভব। এ বিষয়ে চাই ব্যাপক সচেতনতা।
জরায়ুমুখ ক্যানসার
বিশ্বে চতুর্থ হলেও বাংলাদেশে নারীদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের পরই জরায়ুমুখ ক্যানসারের অবস্থান। অথচ এটি এমন একটি ক্যানসার, যা সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয়ের মাধ্যমে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করাও সম্ভব। উন্নত দেশগুলোয় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার অনেক কম হলেও নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোয় এই ক্যানসারে শতকরা ৯০ ভাগ রোগীই মারা যান। সাধারণত ৩৫ থেকে ৫৫ বছরের নারীরা এই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) নামক একটি গোত্রের ভাইরাস দিয়ে জরায়ুমুখ ক্যানসার হয়ে থাকে।
ডিম্বাশয়ের ক্যানসার
ওভারিয়ান বা ডিম্বাশয়ের ক্যানসারকে বলা হয় নীরব ঘাতক। প্রাথমিক অবস্থায় এর তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শরীরে অনেকটা ছড়িয়ে পড়ার পর উপসর্গ প্রকাশ পায়। ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত নারীদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। নারী প্রজননতন্ত্রের ক্যানসারগুলোর মধ্যে ডিম্বাশয়ের ক্যানসার সবচেয়ে মারাত্মক। এর কোনো ক্যানসার–পূর্ব অবস্থা নেই, যাতে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগটি প্রতিরোধ করে যেতে পারে। যেকোনো বয়সের নারী এই ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে ২০ বছরের কম বয়সী মেয়েদের জার্ম সেল নামক ডিম্বাশয়ের ক্যানসার এবং প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে বিশেষত ৫৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী নারীদের এপিথেলিয়াল ওভারিয়ান ক্যানসার বেশি দেখা যায়।
জরায়ু বা ইউটেরাইন ক্যানসার
উন্নত দেশের নারীদের মধ্যে এই ক্যানসারের প্রবণতা বেশি। তবে দিন দিন নিম্ন আয়ের দেশগুলোতেও এর প্রকোপ বাড়ছে। ৯০ শতাংশের বেশি ক্ষেত্রে মেনোপজের পর এই ক্যানসার হয়। তবে ৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ৪০ বছরের আগেই নারীরা এই ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারেন।