বছরের পর বছর লোকসান গুনছে রেল। অথচ দুই যুগের কিছু বেশি সময় আগেও এই খাত ছিল লাভজনক। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, গত ১৫ বছরে রেলে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৮৮ হাজার কোটি এবং লোকসান হয়েছে ২১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ রেলকে প্রতিবছর গড়ে লোকসান গুনতে হয়েছে দেড় হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে বর্তমানে রেলের আয়ের চেয়ে ব্যয় আড়াই গুণের বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেলওয়ের লোকসানের অন্যতম কারণ দুর্নীতি ও অপরিকল্পিত ব্যয়। এ ছাড়া বিনা টিকিটে ভ্রমণ এবং প্রায় সব ট্রেনে অর্ধেকের কম কোচ (বগি) নিয়ে চলাচলের কারণে লোকসানের পরিমাণ বেড়েছে। অর্থাৎ শতভাগ কোচ নিয়ে যদি ট্রেন চলত এবং জনপ্রিয় রুটে যদি ট্রেনের সংখ্যা বাড়ত, তাহলে অপারেটিং রেশিও কমে যেত। পাশাপাশি অপারেশন বাড়াতে হবে পণ্য পরিবহনে। এতে রেলের আয় বাড়বে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক—সুজন (চট্টগ্রাম) সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ভারতে বাংলাদেশের চেয়ে দুর্নীতি অনেকাংশে কম। তারা অতিরিক্ত ব্যয় খুব কমই করে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রকল্প মানেই লুটপাট আর অতিরিক্ত ব্যয়। এসব যত দিন না কমবে, তত দিন রেলে লাভ হবে না।
অপারেটিং রেশিও হলো একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক স্বাস্থ্যের মূল্যায়নের একটি পরিমাপ। অপারেটিং রেশিও যত কম হবে, আয় তত বাড়বে। এটি মূলত একটি নির্দিষ্ট সময়ে মোট ব্যয়কে মোট আয় দিয়ে ভাগ করে নিরূপণ করা হয়। কোনো সংস্থা বা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কতটা দক্ষ, তা সহজে যাচাই করা যায় অপারেটিং রেশিওর মাধ্যমে। এই রেশিও যত বেশি হয়, প্রতিষ্ঠানের পরিচালন দক্ষতা তত দুর্বল হিসেবে গণ্য করা হয়।