ফেলানীর মতোই বাংলাদেশের আরেক কিশোরীকে গুলি করে মারল ভারতীয় বিএসএফ।
১ সেপ্টেম্বর রোববার রাতে মায়ের সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরায় থাকা ভাইকে দেখতে যাওয়ার সময় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে কিশোরী স্বর্ণা দাস (১৪) নিহত হয়।
নিহত স্বর্ণা মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের বাসিন্দা পরেন্দ্র দাসের মেয়ে। সে স্থানীয় নিরোদ বিহারী উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।
প্রথম আলোর সংবাদ অনুসারে, রোববার রাতে স্বর্ণা ও তার মা সঞ্জিতা রানী দাস ত্রিপুরায় বসবাসরত স্বর্ণার ভাইকে দেখতে স্থানীয় দুই দালালের সহযোগিতায় লালারচক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
তাঁদের সঙ্গে আরও ছিলেন চট্টগ্রামের এক দম্পতি। রাত ৯টার দিকে তাঁরা ভারতীয় সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে গেলে বিএসএফ সদস্যরা গুলি চালান।
এতে ঘটনাস্থলেই স্বর্ণা নিহত হয় এবং সঙ্গে থাকা দম্পতি আহত হয়। (কুলাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কিশোরীর মৃত্যু, প্রথম আলো, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪)
১৫ বছর বয়সী ফেলানী খাতুনকে হত্যা করা হয় ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে আর ১৪ বছর বয়সী স্বর্ণা দাসকে হত্যা করা হয় সেই ঘটনার ১৩ বছরের বেশি সময় পর ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাতে।
ফেলানী কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে তার পিতার সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিল আর স্বর্ণা দাস মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্ত দিয়ে তার মায়ের সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরায় অভিবাসী ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিল।
ফেলানী হত্যাকাণ্ডের পর তার লাশ দীর্ঘ সময় ঝুলে ছিল কাঁটাতারের বেড়ায়। কাঁটাতারে ঝুলে থাকা কিশোরী ফেলানীর লাশ প্রবল আলোড়ন তুলেছিল দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে।
কিন্তু এ রকম আলোড়নের পরও শাস্তি হয়নি ফেলানীকে হত্যাকারী বিএসএফ সদস্যের। বিএসএফের আদালত তাঁকে বেকসুর খালাস দেন। এরপর মামলা ভারতের সুপ্রিম কোর্টে গড়ালেও বিচার হয়নি আজও।
বিচার না পেয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেছিলেন, এমনভাবে কেউ যেন তাঁর সন্তানকে না হারায়। সীমান্তে একটি পাখিও যেন বিএসএফের হাতে মারা না যায়। কিন্তু বিএসএফের পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধ হয়নি।