তিন বছর ধরে পাকিস্তানের রাজনীতি মূলত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও দেশটির সামরিক বাহিনীর রশি টানাটানিতে পরিণত হয়েছে। এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে সেনাবাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে আসছেন দেশটির বিভিন্ন বেসামরিক প্রতিষ্ঠান ও বিচার বিভাগের লোকজন।
ক্ষমতার প্রতিযোগিতার শুরুর দিকে ইমরানবিরোধী শক্তির পাল্লা অনেক ভারী ছিল। তবে ইমরানের ব্যক্তিগত ক্যারিশমা, জনমোহিনী বক্তৃতা এবং রাজনৈতিকভাবে মাথা নত না করার সিদ্ধান্তে অটল থাকা তাঁকে শেষ পর্যন্ত কারাবন্দী থাকা অবস্থায়ও খেলার মাঠে টিকিয়ে রেখেছে।
তবে বিচার বিভাগে থাকা খানবিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে ভাঙন ধরায় ইমরানের রাজনৈতিক প্রতিকূলতা কাটতে শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে।
সরকার ইতিমধ্যেই ইমরানের দল পিটিআইকে সংসদে সংরক্ষিত আসন থেকে বঞ্চিত করার পাশাপাশি পিটিআইয়ের ওপর রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এখন দলটির ওপর সরকার অধিকতর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা চিন্তা করছে।
২০২২ সালের এপ্রিলে ইমরান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত ৪ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সামরিক গোষ্ঠী পাকিস্তানের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার অবসান ঘটাতে চেয়েছিল।
কিন্তু নির্বাচনে যা ঘটল, তা দেশটির সামরিক গোষ্ঠী মোটেও আশা করেনি। সবাইকে চমকে দিয়ে জনগণ ভোটের মাধ্যমে খানের পক্ষে ব্যাপক সমর্থন প্রকাশ করেছে।
কিন্তু মধ্যরাতের কারচুপির মাধ্যমে পিটিআইয়ের জয়কে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোট কারচুপির মাধ্যমে খানের দলের বিজয় চুরি করা হয়েছে।
নির্বাচনসংক্রান্ত কাহিনির এই বিতর্কিত সমাপ্তি এবং পরবর্তীকালে সামরিক বাহিনীর আস্থাভাজন শাহবাজ শরিফের অধীন জোট সরকার গঠনের অর্থ হলো, পাকিস্তানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অধরাই রয়ে গেছে।
এই তিক্ত রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার মধ্যে বিচার বিভাগের দুটি শাখার মধ্যে আরেকটি খেলা চলেছে এবং এখনো চলছে।
প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈসার নেতৃত্বাধীন বিচার বিভাগের কিছু লোক ইমরান খানের দলের রাজনৈতিক সম্ভাবনাকে ধসিয়ে দিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।