সমন্বয়বাদী রাজনীতি গড়ে তোলার এখনই সময়

সমকাল জাহেদুল আলম হিটো প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:০৯

সমন্বয়বাদের ইংরেজি সিন্‌ক্রেটিজ্‌ম্‌ হলো বিভিন্ন বিশ্বাসের একত্রীকরণ, যেখানে বিভিন্ন চিন্তাধারা বা বুদ্ধিবৃত্তিক ঐতিহ্যকে (স্কুল অব থট) একত্রে সমন্বিত করার প্রয়াস নেওয়া হয়ে থাকে। সমন্বয়বাদী প্রক্রিয়াতে উৎপত্তিগতভাবে আলাদা ঐতিহ্যকে একত্রে মিশিয়ে দেওয়া বা মিলিয়ে দেওয়া হয়। এটা এক ধরনের অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি, যেখানে অন্যান্য বিশ্বাসের অন্তর্ভুক্তিকরণের একটি পথ করে দেওয়া হয়। রাজনীতিতে সমন্বয়কারী প্রক্রিয়া সমন্বয়বাদী রাজনীতি নামে পরিচিত। 


১৯৭৫ সালে বিপ্লব ও প্রতিবিপ্লবের নানা সামরিক ও রাজনৈতিক উত্থান-পতন এবং ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আবির্ভাব ঘটে। তিনি এদেশে বিভিন্ন ভাষা, ধর্মবিশ্বাস, আর্থিকভাবে বিভক্ত নানা শ্রেণি এবং এগিয়ে যাওয়া আর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এদেশের মানুষের আত্মপরিচয়ের রাজনীতিতে জিয়ার বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের আদর্শ ও দর্শন ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায়। তাঁর গঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) রক্ষণশীল ও মধ্যপন্থার প্রগতিশীল; উভয় পক্ষকেই শামিল করতে সফল হয়েছে। বিএনপি বামপন্থার ডানে এবং ডানপন্থার বামে মধ্যবর্তী মোটামুটি অবস্থান সমন্বয়বাদী রাজনীতির অনন্য দর্শন। ধর্ম ও ধর্মনিরপেক্ষতা একই সঙ্গে ধারণ করে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার বলে সমাজতন্ত্রের নয়া ব্যাখ্যা দিয়েছে বিএনপি। 



বিএনপি সমর্থন করেছে বাজার অর্থনীতিকে; সাদরে বরণ করেছে কল্যাণ রাষ্ট্রের ধারণাকে। কিন্তু বিএনপির এই লিবারেল ও সমন্বয়বাদের রাজনীতিকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পিছিয়ে ফেলে এদেশে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিস্ট রাজনৈতিক দল। ধর্ম, ভাষা, ভূমি ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের বাংলাদেশে জয় বাংলা-জিন্দাবাদের নামে, জঙ্গি ও সেক্যুলারের নামে, শাপলা ও শাহবাগের নামে, স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তির নামে বিভক্তিই আওয়ামী রাজনীতি। 
অথচ বাংলাদেশে আমরা স্বাধীনভাবে জন্মগ্রহণ করেছি। আমরা বেড়ে উঠেছি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে গণতন্ত্রের মধ্যে অথবা স্বৈরাচারের শাসনামলে অথবা এমন একটি দেশে যেখানে কোলাহল, বিবাদ, বিদ্বেষ লেগেই রয়েছে। আর এগুলো এমন বিষয় যার ওপর ছিল ভিনদেশি মদদ। এর মাঝেও আমাদের এ বিশ্বাসটুকু সবসময়ই ছিল যে, কিছু অবিচ্ছেদ্য বা হস্তান্তর-অযোগ্য অধিকার নিয়েই আমরা জন্মেছি। শরীরের অধিকার, স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার, কথা বলা ও লেখার অধিকার, পছন্দের মানুষকে পছন্দ করি বলে প্রকাশ করার অধিকার ইত্যাদি। 


রাষ্ট্র নাগরিকের সম্মিলিত নামের পরিচয়। সেই রাষ্ট্রে নাগরিকদের দ্বারা গৃহীত সনদই হলো সংবিধান। সংবিধান নাগরিকের অধিকারের কথা যেমন বলে, তেমনি কর্তব্যের কথাও বলে। সংবিধানের বাইরে রাষ্ট্র কোনো ক্ষমতা, কর্তব্য বা অধিকার জাহির করতে পারে না। তাই দেশের শেষ কথা সংবিধান, যেখানে জনগণের আকাঙ্ক্ষা লিপিবদ্ধ থাকে। রাষ্ট্র এবং নাগরিকের এই নিখুঁত সহাবস্থানের কোনো ব্যত্যয় ঘটলে তা দেশের জন্য অমঙ্গল ডেকে আনে, যা গত ১৭ বছর আমরা দেখেছি। সংবিধানে যা লেখা আছে, তা যদি কখনও কখনও বিতর্কের সুযোগ করে দেয়, তার ব্যাখ্যার অধিকার বর্তায় বিচার বিভাগের ওপর। স্বাধীন বিচার বিভাগ সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে দাঁড়ালে দেশের সর্বনাশ হতে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না। তখন সবচেয়ে অসহায় হয়ে পড়ে দেশের জনগণ। যেসব অধিকার নাগরিকের পাওয়ার কথা, তা আর খোলা থাকে না তার হাতে। তখন সংবিধান, জনগণ, রাষ্ট্র সবকিছু একাকার হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে। তখন শুধু মাথা তুলে দাঁড়ায় এক্সক্লুসিভ রাজনীতি, স্বৈরতন্ত্রের রাজনীতি। তিল তিল সাধনায় অর্জিত গণতন্ত্র তখন পুলিশি রাষ্ট্রের নিষ্পেষণে জর্জরিত হয়ে ওঠে। রাজনীতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে প্রতিহিংসাপরায়ণতার ধারার হাতে; রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশের একে-অপরকে তেল দেওয়ার সুদীর্ঘ জাল তৈরি হয়ে যায়। তাতে শামিল হয়ে যায় সরকারি কর্মকর্তারাও। তৈরি হয় একটি নতুন ধরনের শাসন ব্যবস্থা, যেখানে সবাই থাকলেও জনগণ শুধু অনুপস্থিত। আইনের শাসন হয়ে পড়ে উপহাসের বিষয়বস্তু। শুরু হয়ে যায় তখন রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর বিদ্বেষমূলক ও অসাধু কর্মকাণ্ড। এসবই এক্সক্লুসিভ রাজনীতির প্রাপ্তি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us