‘এইটুকু সামান্য দাবি, চিঠি দিও। তোমার শাড়ির মতো-অক্ষরের পাড় বোনা একখানি চিঠি’—মহাদেব সাহার এটুকু দাবি কি তার প্রেয়সী রেখেছেন? হয়তো রেখেছেন, হয়তো না। এ যুগের প্রেয়সী কি মহাদেব সাহার চোখে চিঠি লেখা প্রেমিকা? কবি তার প্রেমিকার কাছে প্রেম প্রার্থনা করে সেসময় চেয়েছেন করুণা করে হলেও একটি চিঠি যেন পান, মিথ্যে বলে যদি চিঠিতে ভালোবাসার কথা টুকে দেয়! মহাদেব সাহা কি আজকের চিঠি দিবসেও একখানি চিঠি পেয়েছেন? নাকি হালের পুরুষদের মতো চিঠি লেখার কথা ভুলেই বসেছেন মধ্যরাতে গালগল্পে ভেসে গিয়ে?
চিঠির কদর সুপ্রাচীন। আধুনিক বিশ্বে নতুন প্রজন্ম চিঠির মানে না বুঝলেও শতবর্ষ আগেই বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা ভাবে উদ্ভাসিত হয়েছিল চিঠির কদর। আব্রাহাম লিংকনের কথা নিশ্চয়ই মনে আছে? ঘরে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোথাও কোথাও এখনো শোভা পায় আব্রাহাম লিংকনের লেখা তার সন্তানের শিক্ষকের প্রতি চিঠি। ‘Letter from Birmingham jail’ নামে পরিচিত মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের খোলা চিঠি কিংবা ইংরেজ লেখিকা ভার্জিনিয়া উলফ সুইসাইড নোট হিসেবেও লিখে যাওয়া চিঠি এখনো সমাদৃত সচেতন মানুষদের মননে। বাঙালি কবি, সাহিত্যিকও চিঠিকে রেখেছেন উচ্চাসনে। কবিতায়, গল্পে-গানে চিঠির মাহাত্ম্য ফুটে উঠেছে অনেক। আজ বিশ্ব চিঠি দিবস। চিঠি দিবসকে তুলে রাখুন ‘চিঠিদের’ জন্য।
চিঠি লিখুন মায়ের কাছে
মা পরম যত্নে গড়ে তোলেন সন্তানকে। খেয়ে-না খেয়ে, রোগে-শোকে ভুগেও সন্তানকে যত্নে-স্নেহে লালন করেন। মায়ের ত্যাগের প্রতিদান দিতে কোনো সন্তানই পারে না। কিন্তু ত্যাগের ফলস্বরূপ মায়ের প্রতি ভালোবাসা জিইয়ে রাখে সন্তানরা। সেই ভালোবাসা সন্তান খুব কমই প্রকাশ করে। কখনো প্রকাশ করার সুযোগ হয় না, কখনোবা প্রকাশ করতে গিয়ে পিছিয়ে পড়ে। কখনো প্রকাশের ইচ্ছে জাগে না। তাই আজ ঝটপট সুদৃশ্য বাহারী খামে মায়ের হাতে পৌঁছে যাক ভালোবাসার চিঠি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মায়ের প্রতি লেখা চিঠির মতো বিশাল নয়, যাতে অন্তত স্পষ্ট অক্ষরে লেখা থাকুক ‘ভালোবাসি মা’।