‘ডাক্তার বলেছেন, তাই হাঁটছি’, ‘ওজন বেড়ে গেছে, তাই হাঁটছি’—এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়। বিশেষ করে যাঁরা হাঁটতে বের হন তাঁদের কাছে। আসলেই কি শুধু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে নিয়মিত হাঁটা শুরু করবেন? অবশ্যই না। নিজে সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস জরুরি। সুস্থ অবস্থায়ও নিয়মিত ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটা উচিত বলে মনে করেন চিকিৎসক অনুপম হোসেন। হাঁটার গুরুত্ব মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে প্রায় তিন বছর ধরে ‘লেটস ওয়াক’ নামের একটি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছেন তিনি। চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা শেষে সরকারি হাসপাতাল দিয়ে পেশাজীবন শুরু। তারপর জীবনের পর্ব ভেদে কখনো ক্রীড়াচিকিৎসক, কখনোবা জীবনযাপন বিষয়ে কাজ করেছেন। ডা. অনুপম বলেন, ‘হাঁটা আমার কাছে একটা প্যাশনের মতো। তা ছাড়া আমাদের দেশে প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ অসংক্রামক রোগ, যেমন ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, স্থুলতাসংশ্লিষ্ট জটিলতায় মারা যান। এসব ক্ষেত্রে হাঁটাহাঁটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই জীবনমুখী বিষয়টি আমি কাজ করার জন্য বেছে নিই।’
হাঁটাহাঁটিকে সামাজিক আন্দোলন হিসেবে দেখে লেটস ওয়াক। প্ল্যাটফর্মটির সহপ্রতিষ্ঠাতা সাবরিনা নওরিন জানান, হাঁটাহাঁটি খুব সহজ বিষয় হলেও নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য অর্জনের জন্য হাঁটাহাঁটি করার কিছু নিয়ম আছে। লেটস ওয়াক তাদের ইউটিউব ও ফেসবুক পেজে নিয়মিত এসব বিষয়ে পরামর্শ ও বার্তা দিয়ে থাকে। শুধু ভিডিও পরামর্শ না, নিয়মিত একদল মানুষ নিয়ে হাঁটার অভ্যাসও চালু রেখেছেন তাঁরা। নিয়মিত সেখানে যুক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন মুখ।
ওজন কমানো বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকেই ১০ হাজার কদম (স্টেপ) গুনে হাঁটেন। আসলেই কি প্রতিদিন ১০ হাজার কদম হাঁটতে হবে? এ বিষয়ে অনুপম হোসেন বলেন, ‘শরীর যদি নিতে না পারে, তাহলে ১০ হাজার স্টেপ প্রতিদিন হাঁটার দরকার নেই। ৭ থেকে ৮ হাজার হলেও চলবে। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে হাঁটাহাঁটির সঙ্গে সুষম খাবার এবং ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার পর্যাপ্ত ঘুমও প্রয়োজন।’