শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী

প্রথম আলো তারাপদ আচার্য্য প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২৪, ১০:৫২

গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলেছেন,
‘যদাযদাহি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত।
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্ \
পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে \’
জ্ঞানযোগ (গীতা ৪/৭-৮)


গীতার কথামতো, ধর্মের গ্লানি ও অধর্মের বৃদ্ধির তাৎপর্য হলো, ভগবদ্‌–প্রেমী, ধর্মাত্মা, সদাচারী, নিরপরাধ ও মানুষের ওপর পাপী, দুরাচার, বলবান ব্যক্তির অত্যাচার বৃদ্ধি পাওয়া এবং মানুষের মধ্যে সদ্‌গুণ, সদাচার অত্যন্ত কমে গিয়ে দুর্গুণ-দুরাচারের অত্যধিক বৃদ্ধি পায়। ভগবান অবতার রূপে তখনই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন। ধার্মিকদের রক্ষা করেন। পাপীদের বিনাশ করেন।

কংস জরাসন্ধের সহায়তায় বৃদ্ধ পিতা রাজা উগ্রসেনকে বন্দী করে মথুরার রাজা হন। এ সময় কংসের বোন দেবকীর সঙ্গে বসুদেবের বিয়ে হয়। কংস দৈববাণী শুনতে পান যে দেবকীর অষ্টমগর্ভের সন্তান তাঁকে বধ করবে। তাই মৃত্যুর ভয়ে কংস দেবকী ও বসুদেবকে কারারুদ্ধ করে রাখেন। কারাগারে তাঁদের পরপর ছয়টি সন্তান হয়, তাদের সবাইকে কংস হত্যা করেন। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথির মধ্যরাতে দেবকীর গর্ভে কৃষ্ণ নামে অষ্টম পুত্রের জন্ম হয়।



বংশরক্ষার জন্য বসুদেব তখনই কৃষ্ণকে গোকুলে গোপরাজ নন্দের ঘরে গোপনে রেখে আসেন। সেই রাতেই নন্দের স্ত্রী যশোদার কন্যা যোগমায়ারূপে জন্মগ্রহণ করেন দেবী মহাশক্তি। বসুদেব কৃষ্ণকে যশোদার ঘরে রেখে সদ্যোজাত কন্যা যোগমায়াকে নিয়ে মথুরায় প্রত্যাবর্তন করেন। কংস যখন যোগমায়াকে পাথরে নিক্ষেপ করে হত্যা করতে আদেশ দেন, তখনই যোগমায়া নিক্ষিপ্ত অবস্থায় আকাশে উঠে গিয়ে বলেন, ‘তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে।’


পৃথিবী যখন অধর্মের প্রাদুর্ভাবে ভক্ত ও সাধারণের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে, তখন ধর্ম সংস্থাপনের জন্য কৃপা করে ভক্তের আকুল প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে ঈশ্বর ‘অবতার’রূপ নিয়ে থাকেন। তখন তিনি ষড়গুণ, যথা ঐশ্বর্য, বীর্য, তেজ, জ্ঞান, শ্রী ও বৈরাগ্যসম্পন্ন ‘পূর্ণাবতার রূপে’ প্রকাশিত হন। তার ঐশ্বর্য ও মাধুর্যময় কার্যাবলি বিবেচনা করে ধর্মশাস্ত্রজ্ঞরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন, শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ভগবান।


শ্রীকৃষ্ণ তাঁর জন্ম নিয়ে নিজেই বলেছেন, তাঁর জন্ম-মৃত্যু সাধারণ মানুষদের মতো নয়। ‘মানুষ জন্মগ্রহণ করে এবং মারা যায়। আমি জন্মরহিত হয়েও আবির্ভূত হই এবং অবিনশ্বর হয়েও অন্তর্ধান করে থাকি। আবির্ভূত হওয়া এবং অন্তর্হিত হওয়া, দুটিই আমার অলৌকিক লীলা।’



শ্রীকৃষ্ণের অন্য সব লীলার মতো তাঁর জন্মলীলাতেও সুগভীর অধ্যাত্মতত্ত্ব রয়েছে।


যিনি সর্বাপেক্ষা বৃহৎ, তিনিই ভগবান। বেদে তাঁর পরিচয় ব্রহ্ম। আমাদের ষড় ইন্দ্রিয়, আমাদের ক্ষুদ্র মন, আমাদের সংকীর্ণ বুদ্ধি—এসবের তিনি বহু ঊর্ধ্বে। তাঁকে পাওয়া আমাদের সাধ্যের বাইরে, তবে তাঁকে পাওয়ার জন্য ভক্তের নিরন্তর আকুলতা সৃষ্টিকর্তার মনেও দোলা না দিয়ে পারে না। এ সমস্যার সমাধান করলেন তিনি নিজেই নিত্য ও অনুগ্রহ শক্তির প্রেরণায় ‘অনুগ্রহায় ভূতানাং’।


কৃপা করে তিনি এলেন এই ধূলির ধরায়, আমাদের দুয়ারে। ভগবান অবতরণ করলেন মানুষের ঘরে করুণায় বিগলিত হয়ে। সীমাহীন ধরা দিলেন সীমানার কিনারে, মানুষ সেজে। পরমব্রহ্ম শুদ্ধাভক্তি দেবকী ও শুদ্ধসত্য বসুদেবের ঘরে কৃষ্ণ রূপে পুত্র পরিচয়ে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us