লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী উত্তর গোতামারী গ্রামের শূন্যরেখায় গত শুক্রবার কয়েক হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী জড়ো হয়েছিলেন। ‘ভারতের নেতারা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে এসে কথা বলবেন’, এমন খবর পেয়ে তাঁরা সীমান্তে এসেছিলেন বলে স্থানীয় অন্তত ১০ জন প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো নেতা সেখানে আসেননি। পরে তাঁরা বাড়িতে ফিরে যান।
উত্তর গোতামারী গ্রামের গোয়াশ্মশানঘাটের পাশে খরপো নদী। সেখান থেকে প্রায় তিন শ গজ দূরে কাঁটাতারের বেড়া। ওপারে ভারতের কোচবিহার জেলার শীতলকুচি থানার পাঠানতলী গ্রাম। গত শনিবার ও রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, সীমান্তে বিএসএফ সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, শুক্রবার সকাল থেকেই হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন উত্তর গোতামারী গ্রামের শূন্যরেখায় জড়ো হতে থাকেন। খবর পেয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে ঘরে ফেরার আহ্বান জানান। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা কাঁটাতারের বেড়ার কাছে শূন্যরেখার খরপো নদীতে জড়ো হয়ে থাকেন। কেউ কেউ ভারতে ঢোকার চেষ্টা করলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধা দেয়। পরে তাঁরা বাড়িতে ফিরে যান। এ ঘটনায় গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে বিজিবিসহ স্থানীয় প্রশাসন।
ঘটনাস্থলে যাওয়া গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেখলাম। লেখা ছিল, ‘‘আপনারা এই উত্তর গোতামারী শ্মশানঘাটে আসেন মিটিং হবে।’’ ফেসবুকের এই স্ট্যাটাসের কারণেই সকাল থেকে হাজার হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিভিন্ন উপজেলা থেকে এখানে আসেন বলে মনে হচ্ছে।’
উত্তর গোতামারী এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা সনজিত প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি হাজার হাজার লোক আমাদের সীমান্তে কাঁটাতারের কাছে জড়ো হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম, ভারতকে জানানোর জন্য তাঁরা এখানে এসেছেন।’
কাঁটাতারের কাছে জড়ো হওয়া কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, তাঁদের বাড়ি একটু দূরে। গত সোমবার রাতে কিছু দুর্বৃত্ত তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ভারতের নেতারা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার কাছে আসবেন এবং তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন খবর পেয়ে তাঁরা এসেছেন। তবে কোথায় খবর পেয়েছেন, তাঁরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।