রাজধানীর একাধিক স্থানে আজ শুক্রবার সকাল থেকে শিক্ষার্থী, পেশাজীবী, শিল্পী, চিকিৎসকেরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই তাঁরা গণমিছিলসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন।
রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের সামনে সকাল ১০টার দিকে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। শিক্ষার্থী হত্যার বিচারের দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন। স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে চারপাশ।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘কী দোষ ছিল আমার ভাই মুগ্ধের, কী দোষ ছিল ওই শিশু মেয়েটির, যে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল? কীই-বা দোষে এতগুলো নিরীহ মানুষ মরল! কেন নির্মমভাবে তাদের হত্যা করা হলো। আমরা প্রতিটি হত্যার বিচার চাই।’
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমাবেশে অংশ নেন কলেজের অনেক শিক্ষক ও অভিভাবক। তাঁরাও অনেকে শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন। ফারজানা সুলতানা নামের একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ে কলেজে পড়ে। এখন বাসা থেকে বের হলেই আর মনে শান্তি পাই না। সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি। আমিও এ ধরনের অন্যায়ের বিচার চাই। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মেয়ের সঙ্গে কর্মসূচিতে এসেছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা গণমিছিল কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করেন একদল তরুণ-যুবক। কয়েক ঘণ্টা অবরোধের পর তাঁরা বিকেল ৪টার পর মিছিল নিয়ে শাহবাগে যান। বিকেল সাড়ে ৪টায় শাহবাড় মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। কাছাকাছি সময় ঢাকার ইসিবি চত্বরে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ করছেন কয়েক শ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের এসব অবস্থান থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে যেসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেগুলোর বিচার দাবিতে নানা স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। আটক শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করেও স্লোগান দিচ্ছেন তাঁরা।
এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার পরে আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। বৃষ্টিতে ভিজে মিছিল নিয়ে তাঁরা রামপুরা ব্রিজ পার হয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে আবার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় মিছিলে থাকা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর গলায় পরিচয়পত্র ছিল।
সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শত শত শিল্পী ও সাধারণ মানুষ আজ ধানমন্ডির আবাহনী মাঠের সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্র-জনতা হত্যার প্রতিবাদে শামিল ন। তাঁরা নিহতের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার এবং হত্যার দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগের দাবি করেন।