আগস্ট শোকের মাস। বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত বেদনাবিধুর মাস। জাতির পিতার বিয়োগান্ত হত্যাকাণ্ডের মাস। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, পলিটিক্যাল ক্যাটাগরি হিসেবে বাঙালির স্বতন্ত্র জাতিসত্তার জন্মদাতা, বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট।
তাই, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ইতিহাসের কলঙ্কতম দিন। অবিভক্ত ভারতবর্ষের (১৯৪৭ পর্যন্ত), বিভক্ত পাকিস্তানের (১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত) এবং স্বাধীন বাংলাদেশের (১৯৭১ সালের পরবর্তী) শত বছরের সম্মিলিত রাজনৈতিক ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যার মতো কলঙ্কজনক অধ্যায় আর একটিও নেই।
শত বছরের ইতিহাসে যেমন ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ, ১৫১১-এর বঙ্গভঙ্গ রদ, ১৯৩৫-এর ভারত শাসন আইন, ১৯৪০-এর লাহোর প্রস্তাব, ১৯৪৭-এর দেশভাগ, ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২-এর ছাত্র আন্দোলন, ১৯৬৬-এর ছয় দফা, ১৯৭০-এর জাতীয় নির্বাচন, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং ১৯৭১-এর যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবিতে ২০১৩ সালের গণজাগরণ মঞ্চ প্রভৃতি এতদ অঞ্চলের রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড এতদ অঞ্চলের বিগত একশো বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক, জঘন্যতম এবং ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। জাতির জনকের এ হত্যাকাণ্ড ঘটে কোনো বিদেশি শত্রুর হাতে নয়, বরঞ্চ এদেশেরই কিছু কুলাঙ্গার, এদেশেরই আলো বাতাসে বেড়ে ওঠা কিছু অমানুষ, বাঙালির জাতির পিতাকে হত্যা করে ইতিহাসের এ নৃশংসতম এবং জঘন্যতম কলঙ্কের জন্ম দিয়েছে।
ইতিহাসের এ নৃশংসতাকে মনে রেখে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধার জায়গা থেকে পুরো আগস্ট মাস আমরা জাতীয়ভাবে শোকের মাস হিসেবে পালন করি। এবারও তাই হবে কেননা জাতি হিসেবে পিতার প্রতি জাতির সম্মান প্রদর্শনের এটা একটি প্রতীকী অনুশীলন।