বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে ডলারের দর এক লাফে ৭ টাকা বাড়ানো হয়। গত ৮ মে ‘ক্রলিং পেগ’ চালু করে ডলারের মধ্যবর্তী দর ১১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আগে যা ১১০ টাকা ছিল। ডলারের দর ১১৭ থেকে ১১৮ টাকায় স্থিতিশীল ছিল। বাড়ছিল রেমিট্যান্স। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রপ্তানি, রেমিট্যান্স ও বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। গত সপ্তাহের ছয় দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, তা এর আগের এক দিনেরও কম।
১ জুলাই থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউন ঘিরে সহিংসতায় এ পর্যন্ত দুই শতাধিক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ১৮ জুলাই রাত থেকে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়। ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ রেখে ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড সংযোগ চালু হলেও মোবাইল ডেটার ইন্টারনেট এখনও পুরোপুরি বন্ধ আছে। বর্তমানে দেশের বাইরে যোগাযোগের বেশির ভাগই হয় ইন্টারনেটভিত্তিক।
এ পরিস্থিতিতে টানা চার দিন শিল্পকারখানার সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হওয়ায় সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়ে দেশের রপ্তানি খাত। বিদেশি ব্র্যান্ড-ক্রেতাদের সঙ্গে রপ্তানি চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে পণ্য জাহাজীকরণ সম্ভব হয়নি। এতে অন্তত ৫০০ গুণ বেশি ব্যয়ে আকাশপথে পণ্য পৌঁছাতে হচ্ছে কিছু উদ্যোক্তাদের। নতুন কোনো রপ্তানি আদেশ আসছে না বললেই চলে। আবার কোনো কোনো ক্রেতা প্রতিষ্ঠান চুক্তি মূল্যের চেয়ে কম মূল্য দেওয়ার চেষ্টা করছেন। দেরিতে মূল্য পরিশোধ এমনকি প্রস্তুত হওয়া পণ্য না নেওয়ার কথাও বলছে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান। অনেক চালান শেষ পর্যন্ত স্টকলটের শিকার হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। রপ্তানিকারক উদ্যোক্তারা বলছেন, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত উদ্বেগ রয়েছে তাদের মধ্যে। কারণ, ব্র্যান্ড-ক্রেতারা প্রতিনিয়ত পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। একটা লম্বা সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন তারা।