প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোনো গ্রামকে জেলা-উপজেলা সদরের সঙ্গে যুক্ত করতে ছোট একটি সেতুরও বড় ভূমিকা থাকে। সেতু না থাকলে দুর্ভোগের শেষ থাকে না। আবার সেতু থাকার পর সংস্কারের অভাবে ভেঙে যাওয়ার পর সেই দুর্ভোগ আরও চরম আকার ধারণ করে, যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের পল্লিতে। গত শুক্রবার বিকেলে সেখানকার একটি গুরুত্বপূর্ণ পাকা পদচারী–সেতু ভেঙে পড়েছে। এতে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে প্রায় ১০টি গ্রামের হাজারো মানুষ।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, পদচারী–সেতুটির অবস্থান ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কাঁচামাটিয়া নদীর ওপর। ১৯৯৯ সালের ২ জানুয়ারি সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ৭৫ দশমিক ১০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ‘স্বল্প ব্যয়ে গ্রামীণ সড়কে ব্রিজ বা কালভার্ট নির্মাণ’ প্রকল্পের অধীনে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। পদচারী–সেতু হলেও ছোটখাটো গাড়িও চলাচল করত সেটি দিয়ে। ভেঙে পড়ার কিছুক্ষণ আগে সেতুর ওপর দিয়ে একটি পাওয়ার ট্রলি ও একটি ইজিবাইক পার হয়েছিল।
সেতুটির কংক্রিট নির্মিত প্রায় ২০ ফুট পাকা পাটাতন ভেঙে নদীতে পড়ে আছে। সেতুর পূর্ব পাশে বগাপোতা গ্রাম ও উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের প্রধান বাজার ছাড়া রয়েছে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একটি রেলস্টেশন। সেতুর অপর পাশে রয়েছে মনোহরপুর, তুলন্দর, সাহেবনগর, মালিহাটি, টঙ টঙিয়া, কান্দাপাড়া, চট্টি, মৃধাবাড়ি, ইসলামপুর, সুটিয়া গ্রাম। ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও নানা পেশার লোকজনকে এ অঞ্চলের বড় মোকাম সোহাগী বাজারে যেতে হলে সেতুটি পাড়ি দিয়ে যেতে হয়। বোঝাই যাচ্ছে যে দুই পারের বাসিন্দাদের যাতায়াতের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই পদচারী-সেতু। এখন সেতুটি ভেঙে পড়ায় এসব গ্রামের বাসিন্দাদের যোগাযোগবিচ্ছিন্নতায় পড়তে হয়েছে।
গ্রামের লোকজন ও শিক্ষার্থীরা বাজার, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, স্কুল-মাদ্রাসায় যেতে ঝুঁকি নিয়ে ভেলায় চড়ে নদী পারাপার হচ্ছেন। আবার কেউ অনেক পথ ঘুরে গন্তব্যে যাচ্ছেন। হঠাৎ করে সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাত্র ২৫ বছরে একটি পাকা সেতু ভেঙে পড়ার বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না।