শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ রক্ষা হবে কি

প্রথম আলো ড. নাদিম মাহমুদ প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০২৪, ১৭:০৫

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির পর একজন শিক্ষার্থীর প্রধান কাজ হলো ‘পড়াশোনা’ করা, বিশ্বমানব হিসেবে নিজেকে মেলে ধরার জন্য ‘প্রস্তুতি’ গ্রহণ করা। কিন্তু আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কাজটি করতে এসে ক্লাস-পরীক্ষা বাদ দিয়ে রাস্তায় নেমে কখনো সরকারি চাকরিতে ‘বয়স বাড়ানোর’ সংগ্রাম করতে হচ্ছে, আবার কখনো কোটা সংস্কারের আন্দোলন। আর এসব করতে গিয়ে কখনো তাঁদের শরীরে রক্ত ঝরছে, আবার কখনো মানসিক নির্যাতন।


সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা’ সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার পরিবর্তন (সংস্কার) চেয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছে। শেষ পর্যন্ত তা ‘রক্তপাতে’ গড়িয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকেরা রাতের আঁধারে মারধরের শিকার হয়েছেন। আহত হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন অনেকেই।


স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর, দেশের উচ্চশিক্ষালয়ে এই চিত্রের যে পরিবর্তন হয়নি, তার দায়দায়িত্ব যে–ই নিক না কেন, আমাদের বাচ্চাদের মনে যে ঘৃণাবোধ জন্ম নিচ্ছে, তার দায় অন্তত এই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সরকারকে নিতেই হবে।


যদিও এই সব রক্তপাত-সংঘর্ষের মধ্যে দিয়ে ‘দাবি’ আদায়ের ‘কৌশল’ বহু পুরোনো; কিন্তু পরিবর্তিত বিশ্বের এই সময়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের যেখানে দেশ নিয়ে ভাবার কথা, বৈশ্বিক ক্ষেত্রে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেওয়ার লড়াই করার কথা, সেখানে এই শিক্ষার্থীদের রাজপথে নামতে হচ্ছে, সেটা ভাবতেই কষ্ট লাগছে। তরুণ প্রজন্মের মনটা বিষিয়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু কেন এমন হবে? কেন আমাদের ছেলেমেয়েদের বারবার রাজপথে নামতে হবে?


ভোটের বিতর্ক যেটাই হোক, সংবিধানের ধারাবাহিকতায় এই দেশে ‘সংসদ’ সচল রয়েছে। সাড়ে তিন শ সংসদ সদস্য দেশের আইনপ্রণেতা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু কখনোই তাঁরা আমাদের তরুণ প্রজন্মের দুঃখের কথা, দুর্দশার কথা সংসদে গিয়ে বলেন না। সেখানে গিয়ে তাঁরা দাবি তোলেন না যে চাকরিব্যবস্থায় আমাদের একটি ‘আদর্শিক-দৃঢ়’ নীতির প্রয়োজন। কোনো সংসদ সদস্যই শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি সেজে তাঁদের আক্ষেপগুলো সংসদে শোনাতে পারেননি, সরকারকে সম্পৃক্ত করাতে পারেননি।


জনগণের করের টাকায় চলা সংসদের তাহলে কী নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত?


বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছে, আন্দোলন-সংগ্রাম না করলে কোনো যৌক্তিক দাবিই পূরণ হয় না। আর এসব দাবি পূরণে তাই সরকারপ্রধানের মুখের দিকে চেয়ে থাকতে হয়। এবারও সেটাই ঘটেছে।


কোটা সংস্কারের দাবিতে ছয় বছর আগে শিক্ষার্থীরা যে দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন, সেই আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার ক্ষতি করে দাবি আদায় করেছিলেন, সেই দাবিটিকে অসাড় করে দিয়ে ফের কেন তাঁদেরকে রাস্তায় নামতে হলো? শিক্ষার্থীরা তো কোটা বাতিল চাননি। কোটা বাতিল হয়েছিল সরকারপ্রধানের নির্বাহী আদেশে। সেই আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। সেখান থেকেই নতুন করে জটিলতার শুরু।


বাস্তবতা হচ্ছে, কোটাব্যবস্থার যে একটি সংস্কার প্রয়োজন, এ নিয়ে খুব মতভেদ আছে বলে মনে হয় না। এখন কীভাবে বা কোন প্রক্রিয়ায় তা করা হবে, সেই পরিকল্পনা ও চিন্তাভাবনা নীতিনির্ধারকদের থাকা উচিত। আমাদের মনে রাখা উচিত ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সরকারের ভোটের একটি বড় অংশ ছিল ‘তরুণ’। এই তরুণেরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ, এই তরুণেরা জাগ্রত থেকে ২০১৩ সালে রাজাকার-আলবদরের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার ছিল। এই তরুণেরা এখন দেশের বিভিন্ন দায়িত্বে। ক্রমেই এই তরুণেরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার কথা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us