চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে একটা দারুণ বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কার বিরুদ্ধে আন্দোলন, কেন আন্দোলন, দাবি কার কাছে- এসব ঠিক পরিষ্কার নয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে এক প্রজ্ঞাপন দিয়ে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সন্তানদের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুন হাইকোর্ট সে প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করে দেয়। ফলে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা ফিরে আসে। হাইকোর্টের রায়ের পর আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে আপিল বিভাগ কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন বাতিল করে দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেন। আগামী ৭ আগস্ট আপিল বিভাগে এর শুনানি হবে।
তার মানে আগামী চার সপ্তাহ হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা থাকবে। তার মানে আপাতত শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় হয়েছে। প্রধান বিচারপতিও শিক্ষার্থীদের রাস্তা ছেড়ে ক্লাসরুমে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। সরকারের মন্ত্রী ও নীতিনির্ধারকরাও শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এই মুহূর্তে নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্তের দাবিতে আন্দোলন করছে। কিন্তু আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা একটি বিষয় নির্বাহী বিভাগ বিবেচনায় নিতে পারে না, এই সহজ বিষয়টি আন্দোলনে থাকা ‘মেধাবী’ শিক্ষার্থীরা বুঝতেই পারছে না। তারা জনগণকে জিম্মি করে দাবি আদায় করতে চাইছে। কিন্তু চাইলেও এই মুহূর্তে নির্বাহী বিভাগের কিছু করার নেই। তারচেয়ে বড় কথা হলো, কোটা ইস্যুতে আন্দোলনকারীদের সাথে সরকারের চাওয়ার খুব একটা ফারাক নেই, হাইকোর্টের রায়েও তাদের আন্দোলনের চেতনার বিরুদ্ধে কিছু বলা হয়নি। তাহলে আন্দোলনটা কেন এবং কার বিরুদ্ধে?