বন্যা মোকাবিলায় প্রকৃতি নির্ভর সমাধান কেন জরুরি?

ঢাকা পোষ্ট আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার প্রকাশিত: ০৭ জুলাই ২০২৪, ১২:২৬

বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সাথে বন্যা মিশে আছে। প্লাবনের মধ্যেই এই দেশের মানুষের বসবাস। দেশের মোট ভূমির প্রায় ৮০ শতাংশকে প্লাবনভূমি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। গ্রান্থাম রিসার্চ ইন্সটিটিউট অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্ট এবং সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ ইকোনমিক্স প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে বন্যায় প্রতি বছর বাংলাদেশের প্রায় ৫৫-৬০ শতাংশ প্লাবিত হয় এবং ১ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের ক্ষতি সাধিত হয়।


১৯৭১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ৭৮টি বন্যায় ৪১ হাজার ৭৮৩ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল এবং মোট ১২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছিল। ২০২২ সালের বন্যায় ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছিল এবং ৭.৩ মিলিয়ন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।


তবে এদেশের কৃষকদের জীবনজীবিকা বন্যার সাথে গড়ে ওঠায় বন্যাকে তারা ভয় পায় না। কৃষিকাজের সুবিধার জন্য বাংলাদেশের কৃষকরা যে কৃষি সূচি মেনে চলতো তা এখানকার আবহাওয়া উপযোগী এবং বিভিন্ন ঋতুর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে তৈরি করা। তারা জানতো কখন কীভাবে প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে এবং কৃষিকে চলমান রাখতে হবে।


কৃষি জমি বন্যায় প্লাবিত হলেও কৃষকরা শঙ্কিত হতো না। তারা জানত যে বন্যার সাথে যে পলি আসবে তা তাদের কৃষি জমির উর্বরতা বৃদ্ধি করবে যার ফলশ্রুতিতে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সেই কারণে বন্যার সাথে জীবন যাপনে তারা অভ্যস্ত ছিল। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও মনুষ্য সৃষ্ট বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং সমন্বয়হীন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে ভূমিরূপের পরিবর্তনের ফলে আমাদের দেশের কৃষকরা এখন আর তাদের সেই কৃষি সূচি মেনে চলতে পারছে না। কারণ এখন ষড়ঋতুর দেখা মেলা দায়।


জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গড় তাপমাত্রা পরিবর্তন হওয়ায় বৃষ্টিপাতের ধরণ ও সময় বদলে গেছে। এখন আর প্রাকৃতিক নিয়ম মেনে যথাসময়ে ঋতুর আবির্ভাব ঘটছে না এবং ঋতুর সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে। এছাড়া বিলম্বিত হচ্ছে শীত ও বর্ষার আগমন অথবা অসময়ে ভারী বর্ষণ কিংবা ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে।


সাম্প্রতিককালে আমরা কয়েক ধরনের বন্যা লক্ষ্য করি যার কোনোটি পাহাড়ি ঢলের বন্যা, কোনোটি উজান থেকে আসা বা পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র থেকে আসা বা হঠাৎ বন্যা বা ফ্ল্যাশ ফ্ল্যাড বলা হয়, অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা, উপকূলীয় জলোচ্ছ্বাসের কারণে বন্যা, নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হওয়ার বন্যা ইত্যাদি।


বাংলাদেশে সংঘটিত বন্যাগুলো প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত—প্রথমত, মৌসুমি বন্যা (monsoon flood)—এই বন্যা ঋতুগত, নদনদীর পানি ধীরে ধীরে উঠানামা করে এবং বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে; খ) আকস্মিক বন্যা (flash flood)—আকস্মিক পাহাড়ি ঢল অথবা স্বল্প সময়ে সংঘটিত প্রবল বৃষ্টিপাত থেকে কিংবা প্রাকৃতিক অথবা মানবসৃষ্ট বাঁধ ভেঙে সংঘটিত হয়; এবং গ) জোয়ারসৃষ্ট বন্যা (tidal flood)—সংক্ষিপ্ত স্থিতিকাল বিশিষ্ট এই বন্যার উচ্চতা সাধারণত ৩ থেকে ৬ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং ভূ-ভাগের নিষ্কাশন প্রণালীকে আবদ্ধ করে ফেলে।


বর্তমান সময়ের এই বন্যাগুলোর ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে, একবার প্লাবিত হলে প্রায় মাসব্যাপী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে। ফলে আগে যেমন প্রাকৃতিকভাবেই খুব দ্রুত বন্যার পানি নেমে যেত এবং তিন থেকে সাত দিনের মধ্যেই কৃষকদের পলি জমে একটি উর্বর জমি উপহার দিত এখন তা আর দেখা যায় না। বন্যার সঙ্গে আসা পলি আমাদের মাটির উর্বরতা শক্তি বাড়ায়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us