গত এক সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর ছাড়া আরও দুটো ঘটনা নিয়ে দেশব্যাপী বেশ আলোচনা হয়েছে। একটি গণমাধ্যমকে দোষারোপ করে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি প্রদান এবং অপরটি সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে সংসদে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যদের বক্তব্য। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবরও হয়েছে। ২৬ জুন দৈনিক যুগান্তরে ‘সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে সরব আওয়ামী লীগের দুই এমপি’ শিরোনাম দেখে বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়ে মনে হলো, বাহ্ বেশ তো, খোদ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সংসদ-সদস্যরা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছেন! দুর্নীতি নিয়ে সংসদে তারা আগেও কথা বলেছেন। তবে সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে এমন জোরালো বক্তব্য আগে কখনো শোনা যায়নি। ২০২০ সালে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে মোমেন একবার দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের কানাডায় অর্থ পাচার ও গাড়ি-বাড়ি কেনা বিষয়ে কথা বলে সমালোচনার ঝড় তুলেছিলেন।
তবে সংসদে নয়, সংসদের বাইরে এক অনুষ্ঠানে বিদেশে সম্পদ গড়া ও অর্থ পাচারে রাজনীতিবিদদের তুলনায় সরকারি কর্মকর্তারা যে এগিয়ে, সে তথ্যই তিনি দিয়েছিলেন। কানাডার বেগমপাড়ায় সরকারের অনেক কর্মকর্তারই বাড়িঘর আছে। তার এ বক্তব্য তখন দেশের গণমাধ্যমগুলোয় ফলাও করে প্রচারও হয়েছিল। তবে এটা ঠিক, দুর্নীতি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা অনেক কথাই বলেন। মাঝে-মধ্যে প্রতিবাদও করেন। অতীতে দেওয়া তাদের এমন অনেক বক্তব্যই মানুষের কাছে মুখ রক্ষার বক্তব্য বলে মনে হয়েছে। সরকারদলীয় সংসদ-সদস্যরা মুখে যা বলেন, তা যদি বাস্তবে নিজেরা করে দেখাতেন, তাহলে অন্যদের কাছে তা অনুকরণীয় হতে পারত। কিন্তু যখন দেখা যায়, সরকারি কর্মকর্তা এবং প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ মিলেমিশে একই পাত্রে নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণ করছেন, তখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স’ জানালা দিয়ে পালিয়ে যায়।