আমাদের প্রায় সবার জীবনেই কমলালেবুর সঙ্গে কত না স্মৃতি। শীতের দুপুরের লালচে হয়ে আসা রোদ, চিড়িয়াখানার পিকনিকের চুবড়ি, লম্বা ট্রেনের সফর, দার্জিলিংয়ের মেইল, নানান রঙে রঙিন ফ্রুট সালাদের বাটি বা রোগশয্যায় রসের গ্লাস—সবখানেই কমলার গল্প আছে। সেসব স্মৃতির সঙ্গে রয়ে যায় মানুষের গল্প। যারা জীবনকে নানানভাবে ভরিয়ে রেখেছিল কোনো এক সময়ে। আদা–কমলার এই চিংড়ি রান্নাও মনে করিয়ে দেয় এক টুকরা অতীত। ফেলে আসা দিন। ছেড়ে আসা ছোটবেলা। রানাঘাটে বড় হয়ে ওঠা আমার দিনগুলো ছিল বড় আদরে ভরা, বড় মায়ায় ঘেরা। এবার বলি সেই গল্প। সঙ্গে থাক আমার মায়ের হাতের অসামান্য এক রান্না—সম্পূর্ণ বিনা তেলে আদা–কমলার চিংড়ি।
তেল ছাড়া আদা–কমলার চিংড়ি
উপকরণ: বাগদা চিংড়ি ৮টি, কমলার রস ৩০০ মিলিলিটার, পেঁয়াজকুচি ২টি, আদাবাটা ১ চা–চামচ, এলাচি, লবঙ্গ, দারুচিনি মিলিয়ে ৪টি, কাশ্মীরি লঙ্কা দেড় চা–চামচ, কাঁচা মরিচ ৫–৬টি, ধনেপাতাকুচি ছোট ১ বাটি, গরমমসলাগুঁড়া ১ চা–চামচ, কিশমিশ ১ মুঠো, লবণ ও চিনি স্বাদমতো।
প্রণালি: কড়াইয়ে ৩ কাপ পানি দিয়ে পেঁয়াজকুচি সেদ্ধ করে নিন। এবার এলাচি, লবঙ্গ আর দারুচিনি একটু থেঁতো করে নিতে হবে। সেদ্ধ হওয়া পেঁয়াজ পানি ঝরিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। ঠান্ডা হওয়ার পর পেঁয়াজের সঙ্গে ২টি কাঁচা মরিচ বেটে নিতে হবে। তারপর শুকনা কড়াই গরম করে এতে থেঁতো করে রাখা গরমমসলাগুলো হালকা টেলে নিন। একে একে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচবাটা, আদাবাটা দিয়ে মাঝারি আঁচে নাড়তে থাকুন, যতক্ষণ না আদার কাঁচা গন্ধ যায়। পেঁয়াজ ও আদায় হালকা রং ধরতে শুরু করলে কাশ্মীরি লঙ্কা আর অল্প পানি দিয়ে নাড়ুন। প্রয়োজনে আরও একটু পানি দিয়ে মসলা ভালো করে কষিয়ে, তাতে আরও দুটি কাঁচা মরিচ, কিশমিশ ও চিংড়ি দিন। চিংড়ি বেশিক্ষণ আঁচে রাখা যাবে না। চিংড়ি সেদ্ধ হলে তাতে কমলার রস আর স্বাদমতো লবণ, চিনি দিন। ঝোল ভালোমতো ফুটে ঘন হলে বাটিতে আরও একটু আদাবাটা আর পানি মিশিয়ে ঝোলের ওপরে ঢেলে দিন। এবার এক চামচ গরমমসলা আর ধনেপাতা দিয়ে নেড়ে নামিয়ে ফেলুন।