শিশুকে যে ৫ কথা বলবেন না

প্রথম আলো প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২৪, ১৩:২৭

সন্তানকে মজা করে অনেক কথাই আমরা বলে থাকি। কখনো কখনো আবার রাগ বা অভিমান থেকেও অনেক কথা বলি। বড়দের এসব আপাত সরল ও নির্দোষ কথাই শিশুর কাছে ভিন্ন অর্থ বয়ে আনতে পারে। এসব কথা অনেক সময় শিশুর জন্য হতে পারে নেতিবাচক। তার মানসিক গঠনে ফেলতে পারে প্রভাব। চলুন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মেখলা সরকারের কাছ থেকে জেনে নিই শিশুকে কোন পাঁচটি কথা বলা যাবে না।


মা বেশি ভালোবাসে, না বাবা?


প্রায়ই আমরা সন্তানকে এই প্রশ্ন করে থাকি। কিন্তু এই প্রশ্ন যে একেবারেই করা উচিত নয়, সে বিষয়ে সতর্ক করলেন ডা. মেখলা সরকার। তিনি বলেন, মা–বাবা দুজনেই একটি শিশুর কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর জীবনে তাঁদের দুজনেরই অবদান রয়েছে। যখন এই প্রশ্ন করা হয়, তখন শিশু বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে। কার নাম সে বলবে! ছোট হলেও সে বুঝতে পারে, যেকোনো একজনের নাম বললে অন্যজন মন খারাপ করবেন। আবার সে বুঝতে পারে, যখন মা প্রশ্নটি করছেন, তখন মায়ের নাম বললে তিনি খুশি হবেন। না চাইতেও সে হয়তো মিথ্যা বলে। কিংবা খুশি করার জন্য উত্তর সাজায়। এগুলো খুব ছোট মিথ্যা হলেও এর মধ্য দিয়ে শিশুর মিথ্যা বলার প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যকে খুশি করতে গিয়ে বানিয়ে উত্তর দেওয়ার পথও খুলে যায়। এতে করে তার মনের ওপর চাপ তৈরি হয়।


তোমাকে নয়, তোমার ভাইকে বেশি ভালোবাসি


ভাইবোনদের মধ্যে কখনো তুলনা করতে যাওয়া উচিত নয়। সন্তানদের মধ্যে কখনোই ভালোবাসার ক্ষেত্রে বৈষম্য করা বা তা প্রকাশ করা উচিত নয়। অনেক সময় অভিভাবকেরা মজা করেই বলেন যে তোমাকে ভালোবাসি না। তোমার বোন বা ভাই আমার বেশি প্রিয়।


তুমি একটা গাধা


প্রায়ই আমরা আদর বা রাগ করে সন্তানকে বোকা বা গাধা বলে থাকি। বিষয়টিকে ভীষণভাবে নিরুৎসাহিত করলেন এই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। শিশুরা তো বুঝতেই পারবে না যে তাকে মজা করে বোকা বলা হচ্ছে। সে ধরেই নেবে যে সে বোকামি করে, তাই তাকে বোকা বলা হচ্ছে। আবার কিশোর কাউকে যখন এটা বলা হবে, সে শুনে রাগ করবে। তার ভেতরে একধরনের হীনম্মন্যতা তৈরি হবে। সে নিজেকে নিয়ে কুণ্ঠাবোধ করবে। এসব শব্দ তার ভেতর অপমানবোধের জন্ম নেবে। দেখা যাবে ধীরে ধীরে সে মা–বাবার থেকে দূরে চলে যাচ্ছে।


তুমি পারবে না


কোনো কাজ করার আগে কখনোই বলা যাবে না যে শিশু সেটি পারবে না। তাহলে কাজটি শুরু করার আগেই তার মাথায় এই ধারণা ঢুকে যাবে যে সে তো আসলে কাজটি পারবেই না। কারণ, মা–বাবা তো বলেই দিয়েছেন যে কাজটি সে পারবে না বা তাকে দিয়ে হবে না। তাই সেটি করার যে চেষ্টা, সেটাই আর তার ভেতর থেকে আসবে না। ওই কাজে সে উৎসাহ ও আগ্রহ হারাবে। স্বাভাবিকভাবেই এই নেতিবাচক কথা তার জীবনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই শিশুকে সব সময় উৎসাহ দিয়ে কথা বলা উচিত বলে মনে করেন ডা. মেখলা। যেহেতু মা–বাবা তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, তারা উৎসাহ দিলে সে কাজে আগ্রহ পাবে। তারা পাশে থাকলে যেকোনো কঠিন কাজও সে সহজে করে ফেলতে পারবে।


তোমাকে কুড়িয়ে এনেছিলাম


বাংলাদেশের শিশুদের এই কথা সম্ভবত সবচেয়ে বেশি শুনতে হয়। ভাইবোনের চেহারা বা স্বভাবে মিল না থাকলে কিংবা শিশুর কোনো আচরণ পছন্দ না হলেই মা–বাবা বলে বসেন, তুমি তো আমাদের সন্তান নয়। তোমাকে কুড়িয়ে এনেছিলাম। কিংবা হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসেছিলাম। মা–বাবা হয়তো ভাবেন এটা বললে শিশু ভয় পাবে, ফলে তাদের মনমতো কাজ করবে। কিন্তু ছোট্ট শিশুর মনে এই কথার ভয়ংকর প্রভাব পড়তে পারে। ১১ বছর বয়স পর্যন্ত একটি শিশুর আনুষ্ঠানিক চিন্তার প্রক্রিয়া বা ‘ফরমাল থট’ তৈরি হয় না। কথার যে অন্য অর্থ থাকতে পারে, সেটা সে বোঝে না। ফলে মা–বাবা যখন বলছেন, তোমাকে কুড়িয়ে এনেছি, তখন সেটাকেই সত্যি ভেবে নিচ্ছে শিশু। সে মনে করতে থাকে, আমি তো এই পরিবারের কেউ নয়, এ জন্য আমি আলাদা। এ জন্য আমাকে কম ভালোবাসে, এ জন্য আমাকে বকা দেয়, রাগ করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us