দেশের ক্রিকেটের পঞ্চপান্ডব যুগ কি শেষ হলো

দেশ রূপান্তর সৈয়দ ফায়েজ আহমেদ প্রকাশিত: ২৬ জুন ২০২৪, ১৩:০৬

ক্রিকেটপাগল দেশ হলেও আইসিসি আয়োজিত বহুজাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টগুলোতে বাংলাদেশের পুরুষ দলের সাফল্য অতি সীমিত। সিকি শতাব্দী ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ক্রিকেট খেলার পরও সর্বোচ্চ সাফল্য হচ্ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সেমিফাইনালে যাওয়া। আরও একবার সেই পর্যায়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার সকালে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্র আয়োজিত চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটের আগের দুটি ম্যাচে হেরে যাওয়া বাংলাদেশ এদিন আফগানিস্তানকে বড় ব্যবধানে হারাতে পারলেই সেমিফাইনালের টিকিট পেয়ে যেত।


জিতলেই প্রথমবারের মতো সেমিফাইনাল এ রকম সুযোগের সামনে কিছুটা লেজেগোবরে করে ফেলল আফগানিস্তান। ভালো শুরুর পরও মাত্র ১১৫ রানেই ইনিংস শেষ। বাংলাদেশের সামনে সমীকরণ ১২.১ ওভারে জিতলেই স্বপ্নের সেমিফাইনাল। পিচটা খুব বেশি ব্যাটিং সহায়ক না হলেও, সমীকরণটা মেলানো খুবই সম্ভব বলে আশায় বুক বাঁধছিল বাংলাদেশের সমর্থকরা। আর সে সময় হয়তো কারও কারও মনে হতেই পারে এর আগে সেমিফাইনালে ওঠানো দুই বীর সাকিব আল হাসান আর মাহমুদুল্লাহ এখনো এই দলে খেলেন। ঠিক সাত বছর পনেরো দিন আগে এই দুজনের ২২৪ রানের অবিশ্বাস্য এক জুটির সুবাদে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফির সেমিফাইনালে ওঠে। সে সময়টা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সুসময় আর তার রূপকারদের মিডিয়া ভালোবেসে নাম দিয়েছিল পঞ্চপান্ডব।


কিন্তু জীবনের মতো ক্রিকেটও নিষ্ঠুর। এখানে অতীতের হিসাব ফিকে হয়ে আসে বর্তমানের অক্ষমতায়। সেদিনের বীরমাল্যে পূজিত সাকিব আর মাহমুদুল্লাহ ব্যর্থতা আর গ্লানির সর্বনিম্ন রূপটা দেখেন। টুর্নামেন্ট জুড়েই খারাপ খেলা সাকিব এদিন ব্যাট হাতে প্রথম বলেই আউট হলেন আর মাহমুদুল্লাহ যা করলেন তা অবিশ্বাস্য। তিনি যখন ব্যাটিং করতে নামেন তখনো বাংলাদেশের সেমিফাইনাল সম্ভাবনা শেষ হয়নি, ২৩ বলে ৫২ রান লাগে। এই অবস্থায় পৃথিবীর যে কোনো খেলোয়াড়ই একটা আপ্রাণ চেষ্টা করতেন। ওই খেলায় ১২.১ ওভারের পরে জিতে এমনিতেও তো লাভ নেই। বরং চেষ্টা করে হারাটা গৌরবের। কিন্তু দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা মাহমুদুল্লাহ যা করলেন তা অবিশ্বাস্য। প্রথম বলে একটা সিঙ্গেল নিয়ে লিটনকে স্ট্রাইক দিলেন, যিনি পরপর দুটি চার মেরে আশা উজ্জীবিত রাখলেন। এরপর মাহমুদুল্লাহর সেই অগৌরবময় গাথা। নূর আহমেদের টানা তিনটি বলে তিনি রান নিতে পারলেন না, চতুর্থ বলে একটা চার মারতে পারলেও পরের দুটি বল আবারও ডট। পাঁচ ডট বলের ওভারে সেমিফাইনাল স্বপ্ন মোটামুটি শেষ। এহেন মানসিকতা প্রদর্শন করা ব্যাটারের দিকে সামাজিক মাধ্যমে ধেয়ে যায় অসংখ্য কটূক্তি আর ক্ষোভ। এই ওভারটা কি একই সঙ্গে তথাকথিত পঞ্চপান্ডবের যুগ শেষ করে দিল?


বাংলাদেশ শেষমেশ সেমিফাইনাল দূর, ম্যাচ হেরে যাওয়ায় অস্ট্রেলিয়াও বাদ পড়ে। সংবাদমাধ্যমে খবর আসে এর পরপরই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন কিংবদন্তি অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার ডেভিড ওয়ার্নার। বাংলাদেশে অবশ্য এসব অবসরের উদাহরণ নেই বললেই চলে।  সাকিব আর মাহমুদুল্লাহ তা করেনওনি। তবে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়কের কথাগুলোতে পরিষ্কার হয়, এই দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে যূপকাষ্ঠে তোলার সঙ্গে সঙ্গে এদেশের ক্রিকেট ও সার্বিক সংস্কৃতির দিকে নজর দেওয়াটা জরুরি। আশ্চর্যভাবে অধিনায়ক শান্ত জানান, তারা পরিকল্পনা করেছিলেন প্রথম তিন উইকেট যাওয়ার আগে সেমিফাইনালের উদ্দেশ্যে মেরে খেলবেন, কিন্তু তিন উইকেট পরে গেলে সেই লক্ষ্য থেকে সরে এসে শুধু ম্যাচ জয়ের জন্য খেলবেন। খেলাধুলার ইতিহাসেই এই রকম অবিশ্বাস্য ঋণাত্মক মানসিকতার উদাহরণ আর মনে হয় পাওয়া যাবে না। কেন তিন উইকেট পড়ার সময় লড়াই থেকে পিছিয়ে আসবে? সেমিফাইনাল না যেতে পারলে শুধু ম্যাচটা জিতলে কী প্রাপ্তি হতো? চেষ্টা করতে গিয়ে ১০ ওভারেই অলআউট হলে তা কি এই চেষ্টা না করার কাপুরুষতার চেয়ে অনেক বেশি গৌরবের হতো না?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us