উত্তর-পূর্ব ভারতে আসন কম। তাই অনেক সময় ভারতের রাজনীতি-বিশ্লেষকেরা উত্তর-পূর্বকে অনেক কম গুরুত্ব দিয়ে দেখেন। ২০২৪ সালে সেই উত্তর-পূর্বেই ভোটাররা প্রায় জোটবদ্ধ হয়ে ভোট দিলেন বিজেপি ও তার শরিকদের বিরুদ্ধে। তা ছাড়া কিছুটা হলেও কংগ্রেসের যেন প্রত্যাবর্তন শুরু হলো এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সহিংসতায় জর্জরিত মণিপুর থেকে। মণিপুরে দুটি আসনের দুটিই জিতেছে কংগ্রেস, যা আগে ছিল বিজেপি ও তার শরিকের দখলে।
সব মিলিয়ে উত্তর-পূর্বের ২৪টি আসনের মধ্যে বিজেপি ও তার শরিকদের আসন হয়তো কমেছে মাত্র ৩টি, কিন্তু উত্তর-পূর্বের ৪টি রাজ্য মণিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) সাফ হয়ে গিয়েছে। চার রাজ্যের ছয় আসনের একটিও পায়নি এনডিএ।
অথচ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই ছয় আসনের মধ্যে পাঁচটি পেয়েছিল বিজেপি বা তার উত্তর-পূর্বের শরিকেরা। একটিমাত্র পেয়েছিল কংগ্রেস। মণিপুরে বিজেপি পেয়েছিল একটি এবং তার শরিক নাগা পিপলস ফ্রন্ট একটি। মেঘালয় রাজ্যে দুটি আসনের মধ্যে একটি পেয়েছিল এনডিএর শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।
২০২৩ সালে মেঘালয় বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর বিজেপির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে এনপিপি। ফলে এই দল এখন বিজেপির শরিক। মেঘালয়ে অপর আসনটি পেয়েছিল কংগ্রেস। নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে একটি করে আসন পেয়েছিল যথাক্রমে এনডিএর দুই শরিক ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি ও মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট।
২০২৪ সালের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এবার মণিপুরের দুটি আসনই পেয়েছে কংগ্রেস, মেঘালয়ে একটি পেয়েছে কংগ্রেস এবং অপরটি একটি সম্পূর্ণ নতুন দল ভয়েস অব দ্য পিপল পার্টি (ভিওটিপিপি)।
২০২১ সালে গঠিত ভিওটিপিপি এখনো এনডিএ বা ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে কোনোটিরই শরিক নয়। জয়ের পরে দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আর্ডেন্ট মিলার বাসাইয়াওমোইট বলেছেন, তাঁদের জয় এসেছে যাবতীয় ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে লড়াই করে। জাতীয় ও অন্য সব আঞ্চলিক দল উত্তর-পূর্ব ভারতের নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করে বাসাইয়াওমোইট বলেছেন, তাঁরা চেষ্টা করবেন উত্তর-পূর্বের অন্য ব্যর্থ হওয়া দল ও জাতীয় দলগুলোর পরিবর্তিত দল হিসেবে আগামী দিনে নিজেদের সামনে আনতে।