২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩৮ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জন্য ৪৪ হাজার ১০৮ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বাড়লেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) অনুপাতে শিক্ষা খাতে চলতি অর্থবছরের তুলনায় বরাদ্দ কমেছে। প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা খাতে জিডিপির ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে শিক্ষা খাতে টাকার অঙ্কে ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। আগামী অর্থবছরে বাজেটে শিক্ষা খাতে ৯৪ হাজার ৭১০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
ইউনেস্কোর পরামর্শ, দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করা উচিত। শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় বাজেটের প্রায় ২০ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে আগের মতো এবারও এই দাবি পূরণ হয়নি।
বাজেট ঘোষণার পর থেকে সবাই দেখছি খুশিতে ডুগডুগি বাজাচ্ছে। শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ মাপার সবচেয়ে বড় এবং একমাত্র ইউনিভার্সাল ইয়ার্ড-স্টিক হলো জিডিপির কত অংশ বরাদ্দ পেল সেইটা। কত টাকা বরাদ্দ দিলো এটা কোনো ফ্যাক্টর না। বুঝতে হবে এক বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেড়েছে, ছাত্র সংখ্যা বেড়েছে তাই খরচ বেড়েছে।
আবার টাকার মান কমে টাকা কাগজ হয়ে যাচ্ছে। সেই জন্যই ইউনেস্কো পৃথিবীর সব দেশের জন্য একটা প্রেসক্রিপশন দিয়েছে। তা হলো শিক্ষায় মোট জিডিপির কমপক্ষে ৫.৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া উচিত।
পৃথিবীতে এমন একটি দেশের উদাহরণ পাওয়া যাবে না যেই দেশ জিডিপির ৪.৫ শতাংশের কম বরাদ্দ দিয়ে সভ্য ও উন্নত হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ এইবার বাজেটে শিক্ষায় জিডিপির মাত্র ১.৬৯ শতাংশ বরাদ্দ দিলো। তা নিয়ে গণমাধ্যমের বিশেষ কোনো আয়োজন নেই, নেই কোনো বিশ্লেষণ।
সাধারণ মানুষও শিক্ষায় কম বরাদ্দ নিয়ে তেমন কিছু বলছে না। এতে প্রমাণিত হয় যে, মোটাদাগে দেশের মানুষের প্রতিবাদ করার অনুভূতি নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিবছর আগের বছরের চেয়ে জিডিপি শতাংশে কম বরাদ্দ দিচ্ছে। ৩ বছর আগে ছিল জিডিপির ২.১৮ শতাংশ!