আজ ১১ জুন, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে দিনটি স্মরণীয়। এদিন কথিত ওয়ান ইলেভেনের শাসকদের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী, জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালের এই দিনে প্রায় ১১ মাস কারাভোগের পর দেশের আপামর জনতার অব্যাহত দাবির মুখে কারামুক্ত হন দেশের সফলতম প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি। সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি।
২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর পতন হয় বিএনপি-জামায়াত সরকারের। গঠিত হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এই সরকারের ভেতরে নানা টানাপোড়েনে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ক্ষমতা নেয় বিশেষ এক সরকার, যা ‘ওয়ান ইলেভেনের সরকার’ নামে সমধিক পরিচিত। এই সরকার রাজনীতিসহ জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করে একের পর এক বিধি জারি করে।
এমন পরিস্থিতিতে ১৫ মার্চ ২০০৭ সালে অসুস্থ পুত্রবধূকে দেখতে এবং নিজের চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। কিন্তু এরপর তিনি যাতে দেশে ফিরতে না পারেন, সে জন্য সে সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
এফআইআরে নাম না থাকা সত্ত্বেও জামায়াত-শিবিরের দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়। দেওয়া হয় আরেকটি চাঁদাবাজির মামলা। তবে, ৯ এপ্রিল করা চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা মোকাবিলায় সফর সংক্ষিপ্ত করে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নেন শেখ হাসিনা। কিন্তু বিমানবন্দরে বোর্ডিং পাস না দেওয়াসহ নানা বাধার মুখে পড়তে হয় তাঁকে।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রেসনোট ইস্যু করার পর শেখ হাসিনা বিভিন্ন দেশের মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দেন। সেদিন রাতে তাঁর বক্তব্য প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে দেশের কোনো টিভি চ্যানেল বা পত্রিকায় শেখ হাসিনার প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হয়নি। সরকার তার ওপর নিষেধাজ্ঞার খবরটি বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনাকারী সব এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়। বিমান ও স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
২২ এপ্রিল (২০০৭) বিশ্বের ৪১ দেশের ১৫১টি শীর্ষস্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরতে না দেওয়া সম্পর্কিত রিপোর্ট ছাপা হয়েছিল। ২৫ এপ্রিল (২০০৭) ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ শেখ হাসিনাকে বোর্ডিং পাস না দেওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিল।