আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস (সংক্ষেপে WED)। প্রতি বছর ৫ জুন বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক কর্মোদ্যোগ আর জনসচেতনতার মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
উইকি পিডিয়া বলছে, এই দিনটিতেই জাতিসংঘের মানবিক পরিবেশ সম্মেলন (United Nations Conference on the Human Environment) শুরু হয়েছিল। এই সম্মেলন হয়েছিল ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ৫ থেকে ১৬ জুন অবধি। এই সম্মেলনে ওই বছরই চালু করেছিল জাতিসংঘের সাধারণ সভা। তখন থেকেই প্রতি বছর এই দিবস পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি প্রথম পালিত হয় ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে।
প্রতি বছরই দিবসটি আলাদা আলাদা শহরে, আলাদা আলাদা প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে পালিত হয়। এ বছরের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘করবো ভূমি পুনরুদ্ধার রুখবো মরুময়তা, অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা।’
দুই.
করোনা মহামারিকালে সবকিছু অচল হয়ে পড়ে। ভাইরাসটি ছোঁয়াচে হওয়ায় নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হয়। ফলে লকডাউন, শাটডাউনের মতো সিদ্ধান্তে যেতে হয় কোনো কোনো অঞ্চল বা দেশকে। বন্ধ হয় গাড়িঘোড়া। এমনকি বিমান চলাচলও। কোনো কোনো দেশ সীমান্তও সিলগালা করে দেয়। যাতে ভাইরাসজনিত রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
মহামারিতে ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। অর্থনীতির ওপর সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু এরপরও নতুন একটি অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে মানুষজন। সেটি হচ্ছে প্রকৃতির আবার নতুন করে প্রাণ ফিরে পাওয়া। এই দুই/তিন বছরে মানুষের সর্বগ্রাসী অত্যাচার থেকে অনেকটাই রক্ষা পেয়েছে প্রকৃতি।
জনবহুল পর্যটন স্পটগুলো জনশূন্য হওয়ায় সেখানকার পশুপাখি নিরাপদে ঘুরে বেরিয়েছে। কলকারখানা বন্ধ থাকায় দূষণ কমেছে। কমেছে কার্বন নিঃসরণ। শুধু চীনেই ২০ শতাংশ গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ কম হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে ১০ শতাংশ। ফলে জলবায়ু বিশুদ্ধ হয়েছে। প্রাণ ভরে শ্বাস নিতে পেরেছে মানুষ। ধুলায় ধূসর ঢাকা, দিল্লি ও বেইজিংয়ের আকাশ পরিষ্কার হয়েছে। স্বচ্ছ পানিতে ডলফিনের ঘোরাফেরা দেখা গেছে।
করোনার সময়ে মানুষ সবচেয়ে ভুগেছে অক্সিজেন সংকটে। মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ায় গাছ কাটাও কমে যায়। ফলে প্রকৃতিতে বেড়ে যায় অক্সিজেনের সরবরাহ। পৃথিবী ভরে যায় সবুজে। কোভিড-১৯ এর অন্যতম শিক্ষা হচ্ছে প্রকৃতির ওপর অত্যাচার বন্ধ করে তার কাছে ফিরে যাওয়া। সহাবস্থান না করে অত্যাচার চালালে মানুষও যে টিকতে পারবে না-এটিই যেন বলে দিচ্ছে করোনা মহামারি।