অতিথি আপ্যায়নের ব্যাপারে ইসলাম ব্যাপকভাবে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করেছে। এ কাজের মধ্যে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। বাড়িতে মেহমান তথা কোনো অতিথি আগমন করলে হজরত রাসুল করিম (সা.) এবং তার সাহাবিরা অত্যন্ত খুশি হতেন এবং সাধ্যমতো আপ্যায়ন করতেন। নিজে না খেয়ে মেহমানকে তুষ্টি সহকার খাইয়েছেন। নবি-রাসুল ও সাহাবায়ে কেরামদের জীবনে এমন দৃষ্টান্ত অসংখ্য।
কারও বাড়িতে মেহমান উপস্থিত হলে বাড়ির অধিবাসীদের উচিত অসন্তুষ্ট না হয়ে আল্লাহতায়ালার মহান দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করা এবং মেহমান বা অতিথির সঙ্গে সুন্দর আচরণ করা এবং আপ্যায়নের চেষ্টা করা। হজরত মহানবি (সা.) এরশাদ করেছেন, মেহমানদের ঘৃণা করো না। কেননা, যে মেহমানকে ঘৃণা করল, সে আল্লাহকে ঘৃণা করল আর যে আল্লাহকে ঘৃণা করল, আল্লাহ তাকে ঘৃণা করেন। আমাদের প্রিয়নবি (সা.) আরও এরশাদ করেছেন, যার মধ্যে অতিথিপরায়ণতা নেই, তার মধ্যে কোনো কল্যাণই নেই। ইসলামে যত ধরনের উত্তম কাজ আছে, তার মধ্যে অতিথি আপ্যায়ন অন্যতম।
মহানবি (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিবসের প্রতি ইমান রাখে, সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে (বুখারি ও মুসলিম)। অতিথি আপ্যায়নের ব্যাপারে মহানবি (সা.) সর্বদা তৎপর ছিলেন। কেউ তার বাড়িতে এসে খালি মুখে ফিরে গেছে, এমন কোনো নজির নেই। আল্লাহতায়ালার সকাশে নিজ মর্যাদা বৃদ্ধি এবং গুনাহ মাফের পন্থা হিসেবে প্রিয়নবি (সা.) বলেছেন- তোমরা লোকদের খাবার খাওয়াও এবং রাতে সে সময় উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়, যখন অন্যরা ঘুমিয়ে থাকে।
অতিথি আপ্যায়নের ফজিলত এত বেশি যে, এর কারণে আপ্যায়নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। হজরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা এক ব্যক্তি প্রিয়নবির (সা.) দরবারে এসে জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)! ইসলামে উত্তম কাজ কোনটি? তিনি বললেন, ‘মেহমানকে আহার করাবে এবং পরিচিত ও অপরিচিতজনকে সালাম দেবে’ (বুখারি, মুসলিম)। যে ঘরে মেহমানের আগমন বেশি হয়, সে ঘরে আল্লাহর রহমতের বর্ষণ অধিক হয়।