সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশে প্রাকবর্ষা ও বর্ষায় বজ্রপাতের সংখ্যা ও বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে বলে অনেকেই মনে করছেন। আগে দুর্যোগ হিসেবে চিন্তার কারণ ছিল ঝড়-বন্যা। এখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বজ্রপাত। উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এই দুর্যোগ।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৫-২০২০ সালে বাংলাদেশে তিন ধরনের বজ্রপাত সংঘটিত হয়। এক মেঘ থেকে আরেকটি মেঘে বা আন্তমেঘ, একই মেঘের এক স্থান থেকে আরেক স্থান বা অন্তমেঘ এবং মেঘ থেকে ভূমিতে। এই সময়ে ওই তিন ধরনের বজ্রপাতের মোট পরিমাণ ছিল ৫ কোটি ৫০ লাখ। এগুলোর দৈনিক ও ঋতুভিত্তিক সংঘটনে আবার ভিন্নতা দেখা গেছে।
যেমন ২৪ ঘণ্টা হিসেবে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয় রাত ৮-১০টার মধ্যে, ১২ শতাংশ। ঋতুভিত্তিক বিন্যাসেও বজ্রপাতের ধরনে পার্থক্য রয়েছে। মার্চ থেকে মে মাসে প্রায় ৫৯ শতাংশ, আর মৌসুমি বায়ু আসার সময়, অর্থাৎ জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৩৬ শতাংশ বজ্রপাত হয়। তবে মোট বজ্রপাতের প্রায় ৭০ শতাংশ হয় এপ্রিল থেকে জুনে।
আচমকা এই বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার কারণ কী? আবহাওয়াবিদ এবং বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার তাপ বেশি হওয়ার আর একই সঙ্গে বর্ষাকালের দৈর্ঘ্য বেড়ে যাওয়ার কারণে চলতি বছর বজ্রপাত বেশি হবে। আমাদের এখানে বর্ষা শুরু হয় আগস্টের শেষের দিকে। কিন্তু এবার আগেই শুরু হয়ে গেছে। গত মার্চেই ঝড় বৃষ্টি হয়েছে।
মেঘের সঙ্গে তাপের একটা সম্পর্ক আছে। তাপ বেশি হলে মেঘে কেমিক্যাল ও ইলেকট্রিক্যাল প্রোপার্টি বেশি হবে। ফলে এবার বজ্রপাত বেশি হতেই পারে। দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ ও আবহাওয়াবিদদের মতে, বজ্রপাত বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে বায়ুদূষণ। বিশেষ করে বাতাসে কার্বন-ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়াকেই বজ্রপাত বৃদ্ধি ও বজ্রপাতে মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।