সামাজিক মাধ্যমে ভোটের প্রচারণা ও ‘ডিপ ফেক’

সমকাল গৌতম মণ্ডল প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৪, ১১:২৩

সময়টা অন্য রকম। সবকিছুই যেন সামাজিক মাধ্যমনির্ভর। দুঃখ-কষ্ট, ভালো লাগা-ভালোবাসা– সবকিছুর ঠিকানা ফেসবুক, ইউটিউব বা ইনস্টাগ্রাম। ভারতের চন্দ্রযান-৩ এক মাস ৯ দিন মহাকাশ যাত্রা শেষে কীভাবে চাঁদের বুকে ‘সফট ল্যান্ডিং’ করে, তা ‘লাইভ’ সম্প্রচার হয় ইসরোর ফেসবুক পেজে। পদ্মায় ঝাঁপ দেওয়া রাজবাড়ীর পিউ কর্মকারের সুইসাইড নোটও পাওয়া যায় ফেসবুকে। এতে কোনো সমস্যা নেই। এগুলো বরং হালের প্রযুক্তিনির্ভর যোগাযোগের উৎকর্ষই তুলে ধরে। তবে মাঝেমধ্যে গোলমালও বাধছে; বিশেষ করে ভোটের সময়ে।


নির্বাচনী প্রচারণার কৌশল বদলেছে; সেটি কেবল বাংলাদেশে নয়। পুরোনো প্রচার পদ্ধতির পাশাপাশি অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এখন সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়। নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে ‘সোশ্যাল মিডিয়া এক্সপার্ট’ ভাড়া করার ঘটনাও ঘটছে। দেশে ফেসবুকের ব্যাপক বিকাশের পর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর ব্যবহার আমরা দেখেছি। তখন প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ফেসবুকে জোর প্রচারণা চালায়। দলীয় ইশতেহার ও অঙ্গীকার প্রচার করে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ছিল না। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে ফেসবুক-ইউটিউব ব্যবহারে প্রতিযোগিতা ছিল। 


প্রচলিত তত্ত্ব হলো, বিশ্বের অনেক দেশে মূলধারার সংবাদমাধ্যম নির্বাচনের সময় যখন নানামুখী চাপে; বিরোধী দলের চেয়ে ক্ষমতাসীন দল যখন সুবিধজনক স্থানে; তখন ভোটের প্রচারণায় গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প হয়ে উঠছে ফেসবুক, ইউটিউব বা ইনস্টাগ্রাম। তবে বাস্তবতা বলে, শুধু বিরোধী দল নয়; ভোটের প্রচারণায় সামাজিক মাধ্যমকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকারি দলও। ইদানীং একটি বিতর্ক অবশ্য উঠছে। সেটি হলো, সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ফেসবুক, ইউটিউবে প্রচার বন্ধ করতে পারছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ব্যতিক্রম নিশ্চয় আছে, তবে গেল সংসদ নির্বাচনে এ ব্যাপারে ইসির কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চলমান, তাতেও নেই।  


প্রতিবেশী ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে সামাজিক মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ। দেশটির প্রায় ৫০ কোটি মানুষ সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করেন। তাদের নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা সাজিয়েছে বিজেপি, কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল। যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইনফরমেশনের অধ্যাপক জয়জিৎ পাল মনে করেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে সামাজিক মাধ্যম ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। টেলিভিশন, পত্রিকা ও সরাসরি যোগাযোগ বাদ দিয়ে রাজনৈতিক নেতারা সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন (মিশিগান নিউজ, গত ৮ মে ২০২৪)। 


মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স (সাবেক টুইটার) ভারতে ব্যাপক জনপ্রিয়। পরিচিত প্রায় সব রাজনৈতিক নেতার রয়েছে এক্স অ্যাকাউন্ট। আর ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউব চ্যানেল চালানোর জন্য অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের রয়েছে ‘এক্সপার্ট টিম’। কবে ভোট, কয়টা পর্যন্ত চলবে, কত শতাংশ ভোট পড়ল– সেই বার্তাও যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। শুধু বিজেপি-কংগ্রেস নয়; বড় অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের ফেসবুক পেজ রাজ্যভিত্তিক। প্রতিটি পেজে কোটি কোটি ফলোয়ার। বিজেপির নয়াদিল্লি ফেসবুক পেজে ফলোয়ার ১ কোটি ৬০ লাখ; ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের ৬৮ লাখ। এমন পেজ আছে পশ্চিমবঙ্গ, লক্ষ্ণৌ, উত্তর প্রদেশসহ প্রতিটি রাজ্যের জন্য। এক্স অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেও তাই। নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট বানিয়ে নানাভাবে এই ফলোয়ারের কাছে পৌঁছার চেষ্টা চলছে। তবে সংকট তৈরি হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা ‘এআই জেনারেটেড’ কনটেন্ট নিয়ে।


গত এপ্রিলে সামাজিক মাধ্যমে দুটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে বলিউড তারকা আমির খান ও রণবীর সিংকে বিরোধী দল কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে দেখা যায়। শুরু হয় আলোচনা। অনেকে সত্যি বলে ধরেও নেন। কিন্তু আদতে দুটি ভিডিওই ছিল ‘ডিপ ফেক’। অর্থাৎ এআই দিয়ে বানানো। দুই অভিনেতা পরে এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দেন। ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশি অবশ্য মনে করেন, এমন ঘটনা বা গুজব নির্বাচনী প্রচারণারই অংশ। কিন্তু সামাজিক মাধ্যমের এই যুগে এগুলো দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে। সম্প্রতি বিবিসিকে এ কথা বলেন তিনি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us