‘সহসা সন্ত্রাস ছুঁলো।...
বজ্র-শিলাসহ বৃষ্টি, বৃষ্টি: শ্রুতিকে বধির ক’রে
গর্জে ওঠে যেন অবিরল করাত-কলের চাকা’
শহীদ কাদরীর ‘বৃষ্টি, বৃষ্টি’ নামের এই কবিতা নিয়ে একটি গল্প আছে। তা হলো, তিনি একদিন পুরান ঢাকার তাঁর প্রিয় আড্ডাস্থল বিউটি বোর্ডিংয়ে যেতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় নামল প্রবল বৃষ্টি। অনেক অপেক্ষার পরও বৃষ্টি না থামলে ঘরে বসেই লিখে ফেললেন কবিতাটি।
এইচ বি রীতা এ গল্প তুলে ধরে তাঁর নিবন্ধে লিখেছেন, ‘এ এক নতুন বর্ষার প্রকৃতি, যা অগ্রজদের থমকে দেয়, যা বাংলা সাহিত্য অঙ্গনকে চমকে দেয়। এমন তেজ, এমন বিপ্লব শহুরে বৃষ্টিতে এর আগে বা পরে আর কেউ দেখেনি।’
ঢাকাসহ দেশের সবখানেই এবারের বৈশাখের শেষে তেজি বৃষ্টি দেখা গেছে। প্রতিবছরই এ সময়ে সাধারণত এমন বৃষ্টি হয়। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। আবহাওয়া অফিসের দাপ্তরিক ভাষায় বলে ‘বজ্রঝড়’।
মার্চ থেকে মে মাসে এ ধরনের ঝড়ের পরিচিত নাম ‘কালবৈশাখী’। এ বৃষ্টির সঙ্গে অনেক সময়ই ঝরে শিলা। দুয়ে মিলে কখনো হয় শিলাবৃষ্টি।
বৃষ্টির সঙ্গে পড়া শিলা কুড়ানোর অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। এ অভিজ্ঞতা আনন্দের। ঝুম বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া, এর মধ্যে সাদা রঙের ঠান্ডা গোলক শিলার অবিরাম ঝরে পড়া, টিনের চালে তার শব্দ—হয়তো অনেককেই এসব স্মৃতি আমোদিত করে। কি গ্রাম, কি শহর—সবখানেই এমন অভিজ্ঞতা হয়।
শিশুদের অনেকেই সুতির কোনো কাপড়ে ছোট ছোট সেই শিলা জড়ো করে বড় গোলাকার ‘সাদা নাড়ু’ বানায়। শহর বা গ্রামে, সবখানেই। আর শিলা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বা জড়ো করে বড় গোলাকার বানিয়ে খেয়ে ফেলে অনেকে।
বিষয়টি মজার, সন্দেহ নেই। কিন্তু এই নির্দোষ আনন্দ নিয়ে সাবধানবাণী দিয়েছেন গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, শিলা খেয়ে ফেলাটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ, সেখানে দূষণের নানা উপাদান পেয়েছেন তাঁরা। এ গবেষণা হয়েছে ঢাকার বৃষ্টিতে পড়া শিলাখণ্ড নিয়ে।