বাংলাদেশে আইএমএফের নীতি কাজে দিচ্ছে কি

প্রথম আলো ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২৪, ১১:০৯

আইএমএফের সঙ্গে অংশীদারত্বের মধ্যেই টানা ২২ মাস থেকে বাংলাদেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে, দেশের অর্থনৈতিক সংকটও যাচ্ছে না। কেন? ভুল সময়ে ভুল নীতির বাস্তবায়ন এবং আইএমএফের ছাড় দেওয়ার মানসিকতা এ জন্য দায়ী বলে প্রতীয়মান হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, দেউলিয়া হওয়ার মাত্র ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যেই শ্রীলঙ্কা সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে পারলেও বাংলাদেশ পারছে না কেন?


আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তি ছাড়ের এক বছর পার হলেও মূল্যস্ফীতির অতি উচ্চ হার, ডলারের বাজারে অস্থিরতা, রিজার্ভের পতন চলছে। ব্যাংকে তারল্য–সংকট, মালিকানা হস্তান্তর, দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণে সমস্যা, খেলাপি ঋণ সংকটের কূলকিনারা হচ্ছে না।


সংকটের মধ্যেও সরকারের পরিচালনা ব্যয়ে সংকোচন আসেনি। বাজেট–ঘাটতি কমানো হয়নি, সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ থামেনি (ব্যাংকঋণ, সঞ্চয়পত্র ঋণ, অর্থ ছাপানো, উন্নয়ন খাতের মিলিত ঋণ)।


অর্থবছরের তিন প্রান্তিকের শেষে বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটে বাস্তবায়ন মাত্র ৩০ শতাংশের ঘরে থমকে ছিল। রাজস্ব আয় দিয়ে সরকার উন্নয়নকাজ বাদ দিয়ে শুধু পরিচালনা ব্যয় করা হচ্ছে। সুশাসন ফেরাতে আইএমএফের সঙ্গে দেনদরবারের প্রভাব দৃশ্যমান নয়। গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভুল।


ক্রলিং পেগ পদ্ধতি বাস্তবায়নের (অন্তত দেড় বছর আগে করা উচিত ছিল) মাধ্যমে ডলারের বিপরীতে টাকার দাম পড়তে দেওয়া হয়েছে ভুল সময়ে। সুদের হার বেড়ে যাওয়ার পরও নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে। ধাপে ধাপে না এগিয়ে ‘সাডেন শকে’ যাওয়া হয়েছে।


ডলারের একক রেট সময়মতো বাস্তবায়ন করা হয়নি। ডলারের বিপরীতে টাকাকে প্রকৃত বিনিময় মূল্য বা ‘আরইইআর’–এর কাছাকাছি নেওয়া হয়নি সঠিক সময়ে। অন্তত এক বছর পর এসে টাকার মান একলাফে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ পড়তে দেওয়ায় স্থানীয় মুদ্রায় বৈদেশিক ঋণের মোট স্থিতি বেড়ে গেছে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। ডলারের মূল্য ৭ টাকা বৃদ্ধিতে সরকারের মূল বোঝা বিদ্যুৎ খাতের ক্যাপাসিটি চার্জ; সার ও জ্বালানিসহ যাবতীয় আমদানি এবং বিশেষভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বাড়বে। ফলে দেশ নতুন দফায় মূল্যস্ফীতি প্রত্যক্ষ করবে।


আমানত-সঞ্চয়ে সুদের হারও মূল্যস্ফীতির কাছাকাছি নেওয়া হয়নি সঠিক সময়। ঋণের সুদহার নির্ধারণে তথাকথিত স্মার্ট পদ্ধতি চাপিয়ে দিয়ে দুই অঙ্কের মূল্যস্ফীতির কালে এক অঙ্কের সুদে ঋণ বিতরণ করে বড় শিল্পপতিদের পুরোনো ঋণ ফিরিয়ে নতুন ঋণ দেওয়ার পথ তৈরি করা হয়েছে।


এতে ঋণ অদলবদল ও পাচার বেড়েছে কিন্তু নতুন বিনিয়োগ হয়নি। ব্যাংকিং খাতে বড় বড় ঋণ জালিয়াতি এবং খেলাপি ঋণের পাশাপাশি অতি দীর্ঘ সময় সঞ্চয়কারীদের ঠকানো হয়েছে বলে তারল্য–সংকটও দীর্ঘায়িত হয়েছে।


আইএমএফের শর্তে এক অঙ্কের খেলাপি ঋণের হারের কথা বলা হয়েছে, সেটা বাস্তবায়নে সরকার আবারও ভয়ানক সব পথ ধরেছে। ঋণ পুনঃ তফসিল (রিশিডিউল), রাইটঅফ, প্রভাবশালীদের সুদ মাফ করা হচ্ছে বিলিয়ন ডলার পর্যায়ে। আইএমএফের সঙ্গে নানা শর্তে আবদ্ধ থাকা অবস্থাতেই নতুন করে ব্যাংকিং মালিকানা বেহাত হয়েছে (ন্যাশনাল ব্যাংক)। খেলাপি ঋণ ফেরানোর উদ্যোগ না নিয়ে, শাস্তি না দিয়ে উল্টো তারল্য–সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে দিনে ৫–১০ হাজার কোটি টাকা বা এরও বেশি অর্থ ধার দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার।


বিগত ছয় মাসে অন্তত দুটি প্রভাবশালী শিল্প গ্রুপকে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ মওকুফ করেছে জনতা ব্যাংক। এসব ক্ষেত্রে আইএমএফের সুস্পষ্ট কোনো চাপ দেখা যায়নি। অংশীদারত্বের এক বছরেই সরকারি ব্যাংকগুলোর (সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী) খেলাপি ঋণ বেড়ে প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us