উপজেলা নির্বাচন : ইসির আশা পূরণ হবে কি?

যুগান্তর মো. আবদুল লতিফ মন্ডল প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৬

১৮ এপ্রিল আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে গাজীপুর জেলার রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, ‘ভোটার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। নির্বাচনে প্রার্থীরাই ভোটকেন্দ্রে ভোটার নিয়ে আসার ব্যাপারে বড় ভূমিকা পালন করে থাকেন। বিগত দিনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা বেশি ছিল। এবারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির সংখ্যা শতকরা ৮০ ভাগ থাকবে বলে আমাদের ধারণা’ (যুগান্তর, ১৯ এপ্রিল)। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এই অতি আশা পূরণের সম্ভাবনা কতটুকু তা আলোচনা করাই এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য।


প্রথমে দেখা যাক নিকট অতীতে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির হার কেমন ছিল। আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের অব্যবহিত আগের অর্থাৎ পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০১৯ সালের ১০ মার্চ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নজিরবিহীন অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার প্রতিবাদে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি এবং তার সমমনা দলগুলো ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জন করে। পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠিত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। ৪৭৩টি উপজেলার মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ৩২০টিতে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন। এর মধ্যে ১১৫ জনই নির্বাচিত হন বিনা ভোটে। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান-তিনটি পদেই একক প্রার্থী থাকায় ৩৩টি উপজেলায় কোনো ভোটের প্রয়োজন হয়নি। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৩৯.৪২ শতাংশ। সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং মাঠের বিরোধী দল বিএনপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬০.৯৫ শতাংশ। প্রায় সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৪৭৫টি উপজেলায় মোট ভোটারের ৬৭.৬৯ শতাংশ ভোট দিয়েছিল।


২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়রের শূন্যপদে এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ১৮টি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ১৮টি নবগঠিত ওয়ার্ডে অর্থাৎ দুই সিটি করপোরেশন মিলে ৩৬টি নবগঠিত ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর এবং ১২টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নজিরবিহীন অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ডিএসসিসি ও ডিএনসিসি নির্বাচন বর্জন করে। কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী, এ নির্বাচনে প্রধান আকর্ষণ ডিএনসিসি মেয়র পদে নিবন্ধিত ভোটারদের ৩১.৫০ শতাংশ ভোট দেয়। ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনের দাবি অনুযায়ী, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে গড়ে ২৭.১৫ শতাংশ ভোট পড়ে।


কোনো নির্বাচনে, তা জাতীয় বা স্থানীয় যে পর্যায়েই অনুষ্ঠিত হোক, ভোটার উপস্থিতি নির্ভর করে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণের ওপর। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির মতো বড় দলগুলোর কোনো একটি নির্বাচনে অংশ না নিলে সে দলের সমর্থকদের ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করাটাই স্বাভাবিক। দেশের জাতীয় নির্বাচনের ইতিহাসে তিনটি নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। এগুলো হলো পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এসব নির্বাচনে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর ভোটপ্রাপ্তির পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে মোট ৭৫টি দল-জোট এবং ৪২৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। এ নির্বাচনে মোট যে ভোট পড়ে, তার ৩০.৮১ ও ৩০.০৮ শতাংশ পায় যথাক্রমে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ মোট ভোটের ৬১ শতাংশ যৌথভাবে পায় এ দুটি দল। অবশিষ্ট ৩৯ শতাংশ ভোট পায় ৭৩টি দল ও ৪২৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। জাতীয় পার্টি ১১.৯২ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে থাকে। ১৯৯৬ সালের জুনে অনুষ্ঠিত সপ্তম সংসদ নির্বাচনে মোট ৮১টি দল-জোট এবং ২৮১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। এ নির্বাচনে মোট যে ভোট পড়ে, তার ৩৭.৪৪ ও ৩৩.৬১ শতাংশ পায় যথাক্রমে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। অর্থাৎ মোট ভোটের ৭১ শতাংশ যৌথভাবে পায় এ দুটি দল। বাকি ২৯ শতাংশ ভোট পায় ৭৯টি দল ও ২৮১ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। অবশ্য জাতীয় পার্টি ১৬.৪ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে থাকে। ২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম সংসদ নির্বাচনে মোট ৫৪টি জোট এবং ৪৬৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশগ্রহণ করে। এ নির্বাচনে মোট যে ভোট পড়ে, তার ৪০.৯৭ ও ৪০.১৩ শতাংশ পায় যথাক্রমে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ মোট ভোটের ৮১ শতাংশের বেশি যৌথভাবে পায় এ দুটি দল। বাকি ১৯ শতাংশ ভোট পায় ৫২টি দল ও ৪৮৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামী ৪.২৮ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে চলে আসে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

উপজেলা নির্বাচনের তফসিল হতে পারে কাল

প্রথম আলো | নির্বাচন কমিশন কার্যালয়
১ মাস, ২ সপ্তাহ আগে

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us