উন্নতি, উত্থান ও অভ্যুত্থান

আজকের পত্রিকা সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৪৭

তিনটিই সত্য—উন্নতি যে ঘটেছে, সেটা কোনো মিথ্যাবাদীরই সাহস হবে না অস্বীকার করতে; উত্থান ঘটেছে নানা মাত্রায় ও বিভিন্ন প্রকারে; অভ্যুত্থানও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি একাধিক। যে বিদেশিরা আমাদের পছন্দ করেন, তাঁরা অনেকেই বলেন, বাংলাদেশ যে কেবল উন্নতি করেই ক্ষান্ত হয়েছে তা নয়, দারিদ্র্য ঘুচিয়ে কীভাবে উন্নত হওয়া যায় তার অনুকরণীয় একটি দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে।


উন্নতির চেহারা ঢাকা শহরে বের হলেই হাতেনাতে চোখে-স্পর্শে টের পাওয়া যায়। বাইরে থেকে কয়েক বছর পর, এমনকি এক বছর পরেও যাঁরা আসেন, তাঁরা এমন সব উন্নতি দেখেন যে চিনতে পারেন না, কোথায় এলেন। তবে যাতায়াতটা ভারী কষ্টের। মেট্রো এসেছে, তাতে কারও কারও খুবই সুবিধা হয়েছে। খরচ কিছুটা বেশি, তবু সময় তো বাঁচে। তবে মেট্রোতেও দেখা যাচ্ছে সময়-সময় অচল অবস্থা।


ছাদে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল ছেলেরা, সেই ঘুড়ি ছুটে এসে মেট্রোর বিদ্যুতের তারে গিয়ে পড়ে রীতিমতো বিপর্যয় ঘটিয়েছে। যারা ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল, তারা যে ষড়যন্ত্রকারী, উন্নয়নে বিঘ্ন ঘটানোই যে তাদের উদ্দেশ্য—এমনটা বোধ হয় নয়। তবু অপরাধ তো করে ফেলেছে, শাস্তি না দিলে ওই কাজ আরও ঘটবে; শুনলাম দুজন অপরাধীকে তাই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


এমনিতে ঘুড়ি ওড়ানো অবশ্য কোনো অপরাধ নয়; বরং ভালো কাজই বলা চলে। নিরীহ বিনোদন। কিশোর গ্যাংয়ে যুক্ত হয়ে খুনোখুনি করা, ছিনতাই প্রভৃতি বদমাইশি কর্মে লিপ্ত হওয়া এবং মাদকের আসর বসানোর তুলনায় অনেক বেশি সুস্থ কাজ। আমাদের উচিত, ঘুড়ি ওড়ানোতে উৎসাহ দান করা। কিন্তু ঘুড়ি ওড়াবে কোথায়? খোলা মাঠ কই? ঢাকা শহরে বড় বড় পার্কের বেশির ভাগই চলে গেছে লিমিটেড কোম্পানির মালিকানায়, যেখানে কিশোর তো দূরের কথা, প্রবীণদেরও প্রবেশাধিকার নেই। বাকি পার্কের অধিকাংশের বেলাতেই কিশোরেরা প্রবেশাধিকার পায় না। ঘুড়ি ওড়ানো তো স্বর্গীয় কল্পনা। ছাদে উঠে ওড়াবে? আগের দিনে সেটা কিছুটা সম্ভব ছিল; এখন উন্নত শহরে সেটা অত্যন্ত দুষ্কর। আর ওই যে ওড়াতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনা, অপরাধী হওয়া, জেল খাটা, এসব তো ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য নতুন নিষেধাজ্ঞা। সবটাই কিন্তু ঘটছে উন্নতির কারণে। ঘুড়ি ওড়ানোটা অপরাধ নাকি ওড়াতে না-দেওয়া এবং ওড়ানোটাকে বিপজ্জনক কাজ করে তোলাটা অপরাধ, এই বিচারটা কে করবে? উন্নয়ন, নাকি রাষ্ট্র? উন্নয়ন তো ঘটে রাষ্ট্রের হুকুমেই।


উন্নতির কাছে আমাদের প্রত্যাশাটা কী? অবশ্যই সুখ। কিন্তু উন্নয়ন কেবল যে নদীর গলা টিপে ধরছে বা বনভূমি উজাড় করে দিচ্ছে শুধু তা-ই নয়, নাগরিকদের সুখও কেড়ে নিচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনায় গত এক বছরে প্রাণ হারিয়েছে ৬ হাজার ৫২৪ জন। খবর রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের। এ হিসাব সঠিক নয় বলে কেউ কেউ বলেন। তাঁদের বক্তব্য, প্রাণহানির সংখ্যা আরও বেশি। সব ঘটনা খবরে আসে না।


আশাবাদী হওয়াটা খুবই দরকার, আশাবাদী হতে যাঁরা আগ্রহী করছেন, তাঁরা উন্নতির বিষয়ে নিশ্চিন্ত বোধ করতে পারেন এটা লক্ষ করে যে দেশে বড় একটা ভোক্তা শ্রেণির উত্থান ঘটেছে। তাতে বাংলাদেশে পণ্যের চাহিদা বেশ বেড়েছে। আর পণ্যের চাহিদা বাড়া মানেই তো উৎপাদন বাড়া। কিন্তু তাই কি? দুয়ে দুয়ে চার? নির্ভুল অঙ্ক? যদি তেমনটাই ঘটত, তবে আমাদের জন্য আনন্দের অবধি থাকত না। কারণ উৎপাদন বাড়া মানেই তো কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়া। কিন্তু সেটা কি ঘটছে? বিদেশি পণ্যে কি বাজার ছেয়ে যায়নি? যেসব পণ্য দেশে উৎপাদিত হচ্ছে, সেগুলোর উৎপাদক কোম্পানির বেশির ভাগের মালিকানা ইতিমধ্যেই কি বিদেশিদের হাতে চলে যায়নি? অন্যরাও কি যাওয়ার পথে উন্মুখ হয়ে নেই? সর্বোপরি উৎপাদন এবং ক্রয়-বিক্রয়ের মুনাফাটা যাচ্ছে কোথায়? বড় একটা অংশই তো পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে বিদেশে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us