বাংলাদেশে খাদ্য অপচয়, সত্য না মিথ্যা অপবাদ?

প্রথম আলো ড. গোলাম রসুল প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:১২

মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য অত্যাবশ্যকীয় হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বে এখনো প্রায় ১০০ কোটি মানুষ ক্ষুধা-অনাহারে ভুগছে। খাদ্যের অভাবে অপুষ্টি ও নানা অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত হচ্ছে। এরপরও সেই খাবার অপচয় হচ্ছে।


 গত মার্চ মাসের ২৭ তারিখে জাতিসংঘের পরিবেশ সংস্থা (ইউএনইপি) বিশ্বের খাদ্য অপচয়-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সারা বিশ্বে প্রতে্যক মানুষ গড়ে বছরে গৃহস্থালিতে ৭৯ কেজি খাবার অপচয় বা নষ্ট করে। এই অপচয়ের হার বাংলাদেশে ৮২ কেজি। এটা পৃথিবীর উন্নত দেশের তুলনায় অনেক বেশি।


সংবাদটি অনেককেই বিস্মিত করেছে। কারণ, যে দেশে এখনো অনেক মানুষ তিন বেলা পেট ভরে খেতে পায় না, একটু সস্তায় খাবার কেনার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিসিবির ট্রাকের জন্য অপেক্ষায় থাকে, গ্রামের মানুষ বাড়ির আশপাশ থেকে শাক, লতা-পাতা কুড়িয়ে এনে খায়—সে দেশের মানুষের পক্ষে গৃহস্থালিতে খাবার নষ্ট করা একটি বিলাসিতা।


গরিব মানুষের পক্ষে সত্যিই এ রকম বিলাসিতা করার সুযোগ আছে কি না, এটা চিন্তাভাবনা করে দেখার বিষয়। সংবাদটি বাংলাদেশে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে সম্পাদকীয়ও লেখা হয়েছে।


খাবার অপচয় কেবল সম্পদেরই অপচয় নয়, এর সঙ্গে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য জড়িত। অপচয়কৃত খাবার এবং সৃষ্ট বর্জ্য পরিবেশের দারুণ ক্ষতি করছে। ইউএনইপির এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, খাদ্যের অপচয় থেকে বিশ্বব্যাপী ৮ থেকে ১০ ভাগ ‘গ্রিনহাউস’ গ্যাস নির্গমন হয়। এর মানে হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ খাদ্য অপচয়ের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ও পরিবেশদূষণ করছে। 


এর ফলে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন করে দুটি ‘অপবাদ’ যোগ হলো। ‘খাবার অপচয়কারী’ এবং ‘পরিবেশদূষণকারী’। এই ‘অপবাদ’ দুটি মেনে নেওয়ার আগে যাচাই-বাছাই করে দেখার প্রয়োজন, ইউএনইপির তথ্য কতটুকু সত্য, কীভাবে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে, কীভাবে খাদ্য অপচয় পরিমাপ করা হয়েছে।


এসব বিষয় অনুধাবনের জন্য আমাদের প্রথমেই দেখতে হবে ‘ফুড ওয়েস্ট’ বা খাদ্যের অপচয় বলতে কী বোঝায়। খাদ্য হলো এমন বস্তু, যা মানুষের খাওয়ার জন্য নিরাপদ, পুষ্টিকর, সুস্বাদু এবং খাওয়ার উপযোগী। এটা সরাসরি বা প্রক্রিয়াজাত করে অথবা অর্ধপ্রক্রিয়াজাত করে খাওয়া যেতে পারে।


এখানে একটি বিষয় পরিষ্কার করা প্রয়োজন, সব খাদ্যদ্রব্যের সব অংশই মানুষের খাওয়ার উপযোগী নয়, বা নিরাপদ ও সুস্বাদু নয়। যেমন নারকেল, কাঁঠাল, বেল, আনারস, আম, কলা, অ্যাভোকাডো ইত্যাদি ফলের ভেতরের অংশ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হলেও এর বাইরের অংশ সরাসরি মানুষের খাওয়ার উপযোগী নয়। একইভাবে জীবজন্তুর হাড়, চামড়া, রক্ত ইত্যাদি সরাসরি মানুষের খাওয়ার উপযোগী নয়। এটি ধর্ম, বর্ণ ও পরিবেশ ভেদে ভিন্ন হতে পারে। যেমন আমরা জীবজন্তুর রক্ত খাই না। কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশে এটা উপাদেয় খাবার। 


মোদ্দাকথা হচ্ছে, খাদ্যদ্রব্যের দুটি অংশ থাকে, ভোগের উপযোগী এবং ভোগের অনুপযোগী। খাদ্য প্রস্তুত বা প্রক্রিয়া করার সময় খাদ্যের অনুপযোগী অংশ আলাদা করা হয় বা বাদ দেওয়া হয়, যেটাকে আমরা ‘কিচেন ওয়েস্ট’ বা রান্নাঘরের বর্জ্য বলে থাকি। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us