ঢাকার বর্তমান তাপদাহের প্রতিকার যেখানে

সমকাল ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৭

গত বছর ১৫ এপ্রিল ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যেটি ১৯৬৫ সালের পর অর্থাৎ ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গতকাল ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুযায়ী যা রোববার ৩৯ ডিগ্রি ছাড়াবে। এই তাপদাহ স্বাভাবিকভাবেই অনেকটা নাভিশ্বাস তুলেছে নাগরিক জীবনে। গত ২০ বছরে রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আরও শঙ্কা হলো, এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ঢাকাসহ অন্য জেলা শহরে দিন ও রাতে তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসবে। যে কারণে সব সময় গরম অনুভূত হবে। 


প্রধানত বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও স্থানীয়– এই তিনটি কারণে ঢাকা শহরের তাপমাত্রা বেড়েছে। বৈশ্বিক কারণের মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর ফুসফুস অ্যামাজন ফরেস্ট নষ্ট হওয়া, উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে কার্বন নিঃসরণ ও ফুয়েল বার্ন বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। এর প্রভাব বাংলাদেশের ওপরে পড়ছে। অন্যদিকে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান ও চীন নিয়ে গঠিত জোনে এক সময় যত প্রবহমান নদী ছিল, দিন দিন বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে তার উল্লেখযোগ্য অংশকে মেরে ফেলা হয়েছে। এগুলোর কয়েকটিতে বালু ভরাট করা হয়েছে। আবার কোথাও স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে প্রচুর তাপ বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়ছে। এর সঙ্গে হিমালয়ের বরফ গলার কারণে সেখানে কঠিন পাথর দেখা যাচ্ছে। এক সময় বরফে প্রতিফলিত হয়ে যে তাপ পুনরায় বায়ুমণ্ডলে ফিরে যেত, তা এই পাথরে জমা হয়ে বাতাসের মাধ্যমে আশপাশ অঞ্চলে ছড়িয়ে যাচ্ছে এবং এক ধরনের তাপদাহ সৃষ্টি করছে। এসব অঞ্চলে মেগা সিটি বা শহর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাড়ছে যানবাহন ও জনসংখ্যা। যেমন ভারতে লোকসংখ্যা বেড়ে এখন চীনকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশের বেশি মানুষ এ অঞ্চলে বসবাস করছে। এই বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যাকে তাদের নাগরিক সুবিধা দিতে গিয়েও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।


তবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো স্থানীয়। এক সময় বাংলাদেশে ২৫ শতাংশের বেশি সবুজায়ন থাকলেও বর্তমানে এর পরিমাণ খুবই কম। গাছপালা পরিবেশ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড ও তাপ শোষণ করে অক্সিজেন সরবরাহ করে। ফলে বাতাসে অক্সিজেন ছড়িয়ে আশপাশের এলাকা শীতল রাখে। কিন্তু এখন সবুজায়ন কমে যাওয়ায় বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ও জলীয় বাষ্প কমে গিয়ে তাপমাত্রা বাড়ছে। একই কারণে বৃষ্টিপাতও কমে যাচ্ছে। ঢাকা শহরের জলাধার বা পুকুরের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমছে। জলাধার মাটির পরিবর্তে বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। এটিও তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।


ইউএস-ইপিএর মতে, সাধারণত প্রতি ১০ লাখ লোকের জন্য যে কোনো এলাকার তাপমাত্রা ১ দশমিক ৮ থেকে ৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বাড়তে পারে। আবার মানুষের শরীরের একটি নিজস্ব তাপমাত্রা রয়েছে, যাকে বলা হয় মেটাবোলিক হিটিং এবং প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেত্রেই এই তাপমাত্রার পরিমাণ ১০০ ওয়াট। অর্থাৎ একই স্থানে যত বেশি সংখ্যক মানুষ থাকবে, সেই স্থানের তাপমাত্রা তত বেশি হবে। ঢাকা শহরের বর্তমান জনসংখ্যা দুই কোটিরও বেশি, যেটি প্রত্যক্ষভাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে। 


যত্রতত্র বর্জ্য পোড়ানোর ফলে এর ভেতরে থাকা বিভিন্ন রকম দূষিত গ্যাস ও মাইক্রো প্লাস্টিক বস্তুকণা বাতাসের সঙ্গে মিশে বাতাস দূষিত করছে। বাতাসে ভাসমান এই প্লাস্টিক কণা তাপ ধরে রেখে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে তুলছে। রাজধানীতে চলাচলকারী প্রায় ৫২ লাখ গাড়ির এক-তৃতীয়াংশ ফিটনেসহীন। যানজটের কারণে গাড়িগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ইঞ্জিন চালু করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে ইঞ্জিন থেকে প্রচণ্ড পরিমাণে তাপ নির্গত হয়, যা শহরের পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তোলে। ঢাকা শহরের পিচঢালা রাস্তা দিনের বেলা উত্তপ্ত হয় এবং রাতের প্রথম ভাগ পর্যন্ত তাপ ধারণ করে থাকে। এর পর যখন তা রিলিজ করে তখন তা নগরে তাপ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। বহুতল ভবনগুলোতে অতিরিক্ত গ্লাস এবং এসির ব্যবহারও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us