গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ইসরাইলি হামলার জবাবে ১৩ এপ্রিল ইসরাইলে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে তেহরান। ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের অধিকাংশই বাধা দিতে সক্ষম হয়।
এ ছাড়া সবসময় পাশে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সহায়তায় ইসরাইলের ক্ষয়ক্ষতিও হয় সামান্যই। এদিকে ইরানের ওপর হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার পর বিষয়টিকে ‘সমাপ্ত বলে মনে করা যেতে পারে’ বলে ঘোষণা দেয় তেহরান। যদিও ইসরাইল অন্য কাউকে সাধারণত শেষ কথা বলতে দেয় না।
এদিকে পশ্চিমে তেহরানের এমন ‘আগ্রাসন’ নিয়ে সমালোচনার ঝড় অব্যাহত আছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের এমন বেপরোয়া হামলার কঠোর ভাষায় নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি জোর দিয়ে আবারও দেখিয়েছেন, ইরান আসলে নিজের উঠোনেই বিশৃঙ্খলার বীজ বপন করে। অন্যদিক চেক প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুঃখ প্রকাশ করে জানিয়েছে, ইরানের দীর্ঘমেয়াদি এমন আগ্রাসী আচরণ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও নিরাপদে বসবাসে বাধা দিচ্ছে।
অন্যদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার সম্পর্কে সেই পুরোনো স্লোগানের পাশাপাশি ইরানের সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে এ অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি অবজ্ঞা বলে অভিহিত করেছেন। আর ইসরাইলে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত স্টিফেন সিবার্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসরাইলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, আজ রাতে সব ইসরাইলির ওপর ইরান সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে নজিরবিহীন নির্মমতার পরিচয় দিয়েছে।
সবশেষে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, যিনি এ ঘটনার কারণে সপ্তাহান্তে তার সমুদ্রসৈকত ভ্রমণ সংক্ষিপ্ত করতে বাধ্য হয়েছেন, তিনি ঘোষণা করেছেন : ইসরাইলের নিরাপত্তার বিষয়ে ইরান ও তার মিত্রদের হুমকির বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিশ্রুতি লোহার মতো শক্ত।
মনে রাখা দরকার, ইসরাইলের ওপর ইরানের এ হামলা গাজা উপত্যকায় ইহুদি হত্যাযজ্ঞ চালানোর ছয় মাসের কিছু বেশি সময় পরে ঘটেছে। ইতোমধ্যে ইসরাইলিরা ৩৪ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে শিশুই রয়েছে প্রায় ১৩ হাজার ৮০০। শুধু তাই নয়, আরও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি এখনো নিখোঁজ রয়েছে, যারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হতাহতের এ সংখ্যা ভয়ংকর হলেও নিঃসন্দেহে তা ব্যাপকভাবে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।