বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুজিবনগর সরকারের নেতৃত্ব

বিডি নিউজ ২৪ মোনায়েম সরকার প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৭

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করেছিল। পরে ওই জায়গার নামকরণ করা হয় ‘মুজিবনগর'। অবশ্য ওই সরকার গঠন করা হয়েছিল ১০ এপ্রিল। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ওই সরকার মুজিবনগর সরকার হিসেবেই পরিচিত। ১৭ এপ্রিল ও মুজিবনগর সরকার— দুটোই বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মুজিবনগর সরকার গঠনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত হওয়া নতুন প্রজন্মের মানুষের কাছে নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার কীভাবে, কোন প্রেক্ষাপটে গঠিত হয়েছিল প্রতিটি বাঙালিরই তা জানা উচিত।


সময়ের হিসেবে মুজিবনগর সরকারের বয়স ৫৩ বছর হলেও আজও আমার কাছে মনে হয় সেদিনের ঘটনা। ৫৩ বছরের স্মৃতি কিছুটা ধূসর হলেও সেই স্মৃতি কোনোদিনই মলিন হওয়ার নয়। অত্যন্ত বিপদসংকুল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচরগণ এই সরকার গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। বাঙালি জাতির ইতিহাসে ১০ এপ্রিল চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।


বাংলাদেশ আজ একটি স্বাধীন দেশ। বাংলাদেশের মানুষ এখন স্বাধীন দেশের নাগরিক। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পূর্ব পর্যন্ত বাংলাদেশ পরাধীন ছিল। তার নিজস্ব মানচিত্র ছিল না, পতাকা ছিল না, ছিল না শাসনতন্ত্র তথা সংবিধান। এগুলো সবই এখন বাংলাদেশের আছে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে একটি স্বৈরাচারী সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে বাংলার আপামর জনতা যে দুর্ভেদ্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে, ওই প্রতিরোধই পরে বিজয় রূপে আমাদের সামনে আবিভূর্ত হয়। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি বিশ্বাবাসীকে অবাক করে দিয়েছে। শুধু জনগণের ঐক্যের শক্তিতে একটি ছোট্ট ভূখণ্ডের মানুষ স্বাধীন হতে পারে এই অপরূপ দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে সম্ভবত বাঙালিরাই স্থাপন করেছে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর তৎকালীন পূর্ব বাংলায় প্রতিদিনই ঘটতে থাকে অভাবিত ঘটনা। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের পরে উন্মত্ত হয়ে ওঠে বাঙালি জাতিকে চিরতরে ধ্বংস করার জন্য। ‘একটি বুলেট একটি বাঙালি’— এমনটাই ছিল পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর মনোভাব। অপ্রত্যাশিত সেই দম আটকানো পরিবেশে বাঙালি মুক্তির উপায় খুঁজতে থাকে। মুক্তির লক্ষ্যে তারাও সংঘটিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন পাকিস্তানের কারাগারে। দেশে চলছে মুক্তিযুদ্ধ। কীভাবে ওই মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে তা ছিল অনেকটাই অনিশ্চিত পথ যাত্রা। যেই বঙ্গবন্ধুর ডাকে সর্বস্তরের বাঙালি রাজপথে নেমে লড়াই করবে সেই বঙ্গবন্ধু তখন বাঙালির মাঝে নেই। দিশেহারা বাঙালির সামনে তখন আবিভূর্ত হন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সহচর। তারা বুদ্ধির বলে দিশেহারা বাঙালি জাতিকে একসূত্রে গাঁথার লক্ষ্যে মুজিবনগর সরকার গঠন করেন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল।


এই সরকার গঠন প্রক্রিয়ার ভেতরে অনেক দূরদর্শী মানুষের শ্রম জড়িত ছিল। দেশ-বিদেশের অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী এসে দাঁড়িয়েছিল মুজিবনগর সরকারের পাশে। মহান মুক্তিযুদ্ধের ধারাকে একটি সুশৃঙ্খল রূপ দিতে এবং বাঙালির বিজয় নিশ্চিত করতে মুজিবনগর সরকারের অবদান অনস্বীকার্য।


১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে বাঙালিদের মধ্যে নতুন প্রাণ সঞ্চারিত হয়। ১৭ এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদ শপথ গ্রহণ করে। এই শপথ শুধু একটি অস্থায়ী সরকারের শপথ অনুষ্ঠান ছিল না— এই অগ্নিশপথের মধ্যে নিহিত ছিল পরাধীন পূর্ব বাংলাকে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও স্বাধীন করার প্রেরণা। বলতে দ্বিধা নেই মুজিবনগর সরকার গঠিত ও তাদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের ফলে দেশে-বিদেশে বাঙালিদের পক্ষে জনমত সুদৃঢ় হয়। তখন বাংলাদেশবিরোধী চক্র ছাড়া পৃথিবীর সকল শান্তি ও স্বাধীনতাকামী মানুষই বাংলাদেশকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানায়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us