এদেশে যখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, তখন কলেজে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ চলত। ১৯২১ সালের আগে সমগ্র বাংলায় এ অঞ্চলের বিখ্যাত রাজশাহী কলেজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থেকে অনার্স শ্রেণিতে পাঠদান শুরু করে। এরপর সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে যায়। ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরেও রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গণে এবং বড়কুঠিতে প্রশাসনিক দপ্তর ও ক্লাস নেওয়া শুরু হয়। এরপর মতিহারে একাডেমিক ভবন নির্মিত হলে ধীরে ধীরে ক্যাম্পাসের অবয়ব বাড়তে থাকে।
বাংলাদেশের জন্ম হলে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় ও ১৭টি বড় কলেজ নিয়ে দেশের উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম চলতে থাকে। যদিও সেসময় ঢাকায় কয়েকটি মহিলা কলেজ বেশ সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হয়ে আসছিল। বিভাগভিত্তিক হিসাব ধরে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রামের কলেজগুলো এ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থেকে পরিচালিত হলেও খুলনা বিভাগে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় না থাকায় সেখানকার কলেজগুলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে আসে। এরপর নতুন নতুন ডিগ্রি ও অনার্স কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে সেগুলো একই নিয়মানুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধীনে থেকে পরিচালিত হতে থাকে।
এক সময় নামি কলেজগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। তখন বড় কলেজগুলো থেকে দুই বছরের নরমাল গ্রাজুয়েশন ও তিন বছরের অনার্স ডিগ্রি দেওয়া হতো। তখন কলেজে মাস্টার্স পড়ানোর প্রচলন ছিল না। কলেজ থেকে দুই বছরের ডিগ্রি পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছর প্রিলিমিনারি কোর্স শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই সেশনের অনার্স ডিগ্রিধারীদের সঙ্গে মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ার সুযোগ পেত। আবার কলেজ থেকে তিন বছরের অনার্স ডিগ্রি পাশ করে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই সেশনের অনার্স ডিগ্রিধারীদের সঙ্গে মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ার সুযোগ পেত। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের ‘পিলু’ ও ‘কলু’ নামে আলাদা পরিচিতি ছিল। কিন্তু সেটাতে তারা কিছু মনে করত না। বরং দুই বছরের ডিগ্রিধারীরা ভালো ফলাফল করে এলে দ্রুত বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে ক্যাডার সার্ভিসে ঢুকে যেত। তখনকার দিনে অনেকে একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতো, আবার সময় বাঁচানোর জন্য ডিগ্রি পাশকোর্স সমাপ্ত করে চাকরি করত। পরবর্তীকালে একজন শিক্ষার্থীর একসঙ্গে বহু জায়গায় ভর্তি হওয়ার এ প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়।