সম্প্রতি বিএনপি: অস্থিরতায় যত কথা

আজকের পত্রিকা মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৪, ১০:২৯

৭ জানুয়ারির আগের ঘটনাবলি সবারই জানা। নির্বাচনের পর বিএনপির নেতৃবৃন্দ আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। যাঁরা কারাবন্দী ছিলেন, তাঁদের প্রায় সবাই জামিনে বের হয়ে এসেছেন। ২৮ অক্টোবরের আগে দলীয় নেতা-কর্মীরা যতটা সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন, ২৮ অক্টোবরের কাণ্ডজ্ঞানহীন উন্মত্ততার কারণে, নির্বাচন বর্জন, প্রতিরোধ ও অগ্নিসংযোগের ধারায় ফিরে যাওয়ার কারণে সরকারের ধরপাকড়ে ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে বিএনপি। নির্বাচন বর্জনের আওয়াজ গর্জনেই মিশে গেছে। নির্বাচন যথারীতি হয়েও গেছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে সরকার গঠন করে। বিদেশিরা শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এর ফলে বিএনপির সব কৌশলই মাঠে মারা গেছে। এখন সরকারের বিরুদ্ধে নানা কথা বলা যাবে, কিন্তু আন্দোলন গড়ে তোলা মোটের ওপর প্রায় অসম্ভব। সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে যে ১১টি সমস্যা চিহ্নিত করেছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হলে সরকারের বিরুদ্ধে মাঠ উত্তপ্ত করার তেমন কোনো ইস্যু থাকবে না। আপাতত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দুর্নীতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা গেলে মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠার সুযোগ থাকবে না। এমনিতে বাংলাদেশে রমজান উপলক্ষে দ্রব্যমূল্যের ওঠানামা ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের একটি জনভোগান্তিমূলক কারবার! এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। আগে থেকেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিরাজ করছিল। বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যসামগ্রীর দাম ডলার-সংকটের কারণে অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করছিল। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা ও লাভ করার কারসাজি। ফলে রমজানের আগে-আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ে বাজার গরম হয়ে উঠেছিল। সেটি এখন অনেকটাই কমে এসেছে। ঈদে কিছুটা আবার ঝাঁকুনি দেবে, তবে ঈদের পর আবার মোটামুটি স্থিতিশীল পর্যায়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।


এ অবস্থায় বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দল দেশে ঈদের পরে আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বললেও বাস্তবে তা কতটা সম্ভব হবে তা তখন দেখা যাবে। আপাতত বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে গত আন্দোলন ও নির্বাচন নিয়ে যেসব জিজ্ঞাসা রয়েছে, সেগুলোর উত্তর অনেকেই জানতে চায়, বুঝতে চায়। আবার সামনে উপজেলাসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সিদ্ধান্ত কী হবে, সেটিও অনেকের জানার আগ্রহ যে রয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। দলের নীতিনির্ধারণী সভায় সেই সব প্রশ্নের যুক্তিসংগত জবাব কতটা দেবে, তার ওপর সামনের দিনগুলোতে দলের কার্যক্রমে নেতা-কর্মীদের যুক্ত হওয়া অনেকটাই নির্ভর করবে। আপাতত বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা বক্তৃতা-বিবৃতিতে যেসব কথা বলছেন, তা নিয়ে দলের ভেতরে ও বাইরে শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে নানা জিজ্ঞাসা এবং হতাশাও তৈরি হয়েছে। বিশেষত দলের মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে নিজের চাদর ছুড়ে ফেলার যে কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা নিয়ে দলের ভেতরেই যেমন জিজ্ঞাসা রয়েছে, দলের বাইরে বিএনপির শুভানুধ্যায়ী বিভিন্ন পেশার মানুষের মধ্যে শুধু হতাশাই নয়, ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কাও সৃষ্টি হয়েছে। দলের কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে মুখপাত্র হয়ে রিজভী সাহেব যা করেছেন, তাতে তাঁর ভারতবিরোধিতার মনোবৃত্তির প্রকাশ ছাড়া আর কিছু ভাবা যায় না। দেশের ব্যবসায়ী মহলই শুধু নয়, সাধারণ মানুষও জানে যে ভারত নিকটতম প্রতিবেশী এবং অনেক বড় অর্থনীতির দেশ।


বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সম্পর্ক ভারতের সঙ্গে আমাদের জন্য সুবিধাজনক। আমরা ছোট দেশ, কিন্তু জনসংখ্যা অনেক বেশি। সে কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মধ্যে এমনকি কাঁচা শাক-সবজিও ভারত থেকে আমদানি করে আমাদের চাহিদা পূরণ করতে হয়। বর্তমান দুনিয়ায় নিকটতম কোনো প্রতিবেশীকে বয়কট করার এমন কোনো নজির নেই। তা ছাড়া ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো যুদ্ধবিগ্রহ চলছে না, খারাপ সম্পর্কও বিরাজ করছে না। অনেক পুরোনো বেশ কিছু সমস্যা এরই মধ্যে সমাধানও করা হয়েছে। বাকি যে কটি রয়েছে, সেগুলোও আলোচনার টেবিলে রয়েছে। সুতরাং, ভারতের পণ্য বর্জনের ডাক দিয়ে উভয় দেশের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক গড়ে তোলার পরিণতি বাংলাদেশের জন্য খুব একটা সুখের হবে না। উগ্র হঠকারী ছোট ছোট দল বা ব্যক্তির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন থাকলে তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু ক্ষমতাপ্রত্যাশী রাজনৈতিক দল যখন এ ধরনের কোনো ডাকে সায় দেয়, তখন সেই দেশের বন্ধুত্ব দলটি কোনোকালেই আসা করতে পারে না। নির্বাচনের আগে বিএনপি সব সময় ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক আছে বলে দাবি করে থাকে, নেতারা নয়াদিল্লি সফর করে সে কথা জানান দিয়ে আসেন। কিন্তু নির্বাচনে হেরে গেলে ভারতকে হারার জন্য দায়ী করে, আবার জয়লাভ করলে উচ্চবাচ্য করে না, ভারতের সঙ্গে বাহ্যিক সম্পর্ক দেখানোর চেষ্টা করে থাকে। ভারতের নীতিনির্ধারকেরা নিশ্চয়ই বিএনপির দ্বৈত আচরণ লক্ষ করতে ভুল করেন না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us