সমাজে সামগ্রিকভাবে মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে

আজকের পত্রিকা রাশেদা রওনক খান প্রকাশিত: ২৪ মার্চ ২০২৪, ১২:৫৮

আজকের পত্রিকা: অবন্তিকার আত্মহত্যার নোট পড়ে মনে হয়েছে তাঁকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। আপনার কী মনে হয়?


রাশেদা রওনক খান: আসলে অবন্তিকাকে আত্মহত্যা করতে সমাজ এবং সমাজের মানুষগুলো প্ররোচিত করেছে। কখন একজন মানুষ আত্মহত্যা করে? যখন তার আর কোনো অবলম্বন, কোনো আশা, শেষ আশ্রয়টুকু থাকে না, সবকিছু হারিয়ে একাকিত্বে ভোগে, তখন একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। অবন্তিকার ক্ষেত্রেও ভিন্ন কিছু ঘটেনি—সে যখন তার বন্ধু-সহপাঠীদের কাছ থেকে আশাহত হয়েছে, বন্ধু-সহপাঠীরা তার বিপদের সময় এগিয়ে আসেনি, আর তার বিভাগও তার পাশে দাঁড়ায়নি। প্রক্টর অফিসে আবেদন করেছিল বলে দাবি করা হয়; অর্থাৎ তার চারপাশে যেসব জায়গায় কথা বলা দরকার, সেটা করেও যখন কোনো সমাধান পায়নি, তখন কিন্তু একটা বদ্ধ ঘরে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিল। এর জন্য আসলে আমাদের পুরো সমাজব্যবস্থা দায়ী। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা ও তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আমাদের চারপাশ দায়ী।


রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদের ক্ষেত্রে একই ব্যাপার লক্ষ করা গেছে। তিনিও একাকিত্বের কারণে আত্মহত্যা করেছেন। সেই জায়গা থেকে বলব, আসলে এই সময়ের স্বার্থপর, ব্যক্তিকেন্দ্রিক যে সমাজব্যবস্থা, তা দায়ী। আমরা, সমাজের মানুষ—সবাই ভান করছি একসঙ্গে থাকার। কিন্তু খুবই বিচ্ছিন্ন ও সংকীর্ণ গণ্ডিতে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে আছি। এখানে না আছে সামষ্টিকতার চিন্তাভাবনা, না আছে মানবিকতার বিশুদ্ধ চর্চা।


আজকের পত্রিকা: সাদি মহম্মদের ব্যাপারটি আলাদা। আর অবন্তিকাকে তো মানসিক নিপীড়নের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।


রাশেদা রওনক খান: ভিন্ন তো বটেই। তবে সমাজের প্রতি, কাঠামোর প্রতি হতাশা দুটো ক্ষেত্রেই ঘটেছে। অবন্তিকার ক্ষেত্রে হতাশার জায়গাটা হয়তো ভিন্ন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিপীড়নের শিকার সব নারী শিক্ষার্থী কিন্তু কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দেয় না। বলা যায় প্রায় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী পাবলিকলি অভিযোগ করে না। যে কয়েকজন জানায়, তারা কিন্তু তাদের জীবনের সব ধরনের ঝুঁকি নিয়ে—তার পরিচয় উন্মোচিত হয়ে যাবে, ভবিষ্যৎ অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারে, জীবনে কালিমা লেপন হতে পারে, ইমেজ-সংকট তৈরি হতে পারে, নানান পারিবারিক-সামাজিক চাপ আসতে পারে—এ রকম বিভিন্ন ধরনের শঙ্কা ও ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কিন্তু একটা মেয়ে আসে তার সমস্যার কথা বলার জন্য যে সে নিপীড়িত হচ্ছে। অবন্তিকা তাদের মধ্যে একজন।


যখন একজন মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং নিজের পরিচয় নিয়ে সহপাঠীর বিরুদ্ধে, শিক্ষকের বিরুদ্ধে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড়ায় এবং বিচার চায়, তার মানে সে কিছু মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। রাষ্ট্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যখন বিচার করতে ব্যর্থ হয়, খুব স্বাভাবিকভাবেই তখন নিপীড়িত ছাত্রী ভাবে, তার বুঝি আর বেঁচে থাকার কোনো আশা বা উপায় নেই।


সেই আশাহতের জায়গা থেকেই হয়তো অবন্তিকা আত্মহত্যা করেছে। আজকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং একটি বড় ধরনের মানসিক সংকট তৈরি করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন। আমরা এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আত্মহত্যা করার প্রবণতা আছে—এমন শিক্ষার্থীদের ওপর একটি গবেষণার কাজ করছি; যেখানে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে শ্রেণিকক্ষে, বিভাগে, আবাসিক হলে এবং বড় পরিসরে ক্যাম্পাসে নানা ধরনের বুলিংয়ের শিকার হওয়ার কারণে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us