যদি তামাশা করে বলি এই বকেয়া টাকা নস্যিমাত্র। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভাষায় `এটা কোনো টাকা হলো? হ্যাঁ, এই ২৫ হাজার কোটি টাকার পরিমাণ তেমন কোনো বড় অংক নয়। গ্যাসখাতের মতো সরকারি আরও ২৫টি খাত রয়েছে, যাদের বকেয়ার পরিমাণ কয়েক লাখ কয়েক হাজার কোটি টাকারও বেশি হবে। কেবল সরকারি ব্যাংকগুলোর ঋণখেলাপকারী শিল্পপতি-ব্যবসায়ীরা ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা কোনো দিনই ফেরত দেবেন না। তারপরও সংসদে ব্যাংক আইন সংস্কার করে বিল পাস করেছে, যাতে খেলাপকারী তার অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পারেন। তার অন্য কোনো ব্যাংকে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে ঋণ খেলাপি হয়ে থাকলেও, সেই অপরাধ কোনো বাধা হবে না।
আগে একজন শিল্পপতি তার যে কোনো প্রতিষ্ঠান ঋণ নিয়ে ফেরৎ না দিয়ে থাকলে সেই ব্যক্তি ও তার অন্য প্রতিষ্ঠান কোনো রকম ঋণ পাবেন না ভোগী ঋণীগণ পথের কাঁটা দূর করেছেন সংসদ সদস্যদের দিয়ে। সরকারি দল কোনো লোভে পড়ে ঋণ খেলাপিরে অন্য প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেওয়ার আয়োজন করলেন। তারা একবারও ভাবেন না যে টাকাটা জনগণের, কোনো সরকারের নয়।
এটা আমরা নিশ্চিত করেই তা বলতে পারি যে আর কোনোদিনই ওই খেলাপি ঋণ ফেরত আসবে না। বরং উল্টো নতুন করে ঋণ খেলাপ করে পায়ের ওপর পা দিয়ে ভোগ করবেন এবং মাননীয় ক্ষমতাবান সরকার কিছুই করতে পারবেন না।
তার পরও সরকার প্রধান যখন একটি শিল্পগ্রুপকে বিশেষ বিবেচনায় ২২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশ দেন, তখন আমরা বুঝি সরকারের টাকার কোনো ঘাটতি নেই। এবং তা যেন তার নিজেরই ব্যক্তিগত অংশ। যে কোনো ত্বরিত দরকারে টাকা ছাপিয়ে যে কোনো ঘাটতি মেটানো হবে। এর মধ্যে একটি সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে যে সরকার দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করে ব্যাংক খাতের দুর্বলতা দূর করার উদ্যোগ নিয়েছেন। সারা বিশ্বেই এই প্রক্রিয়া একটি প্রায় নিয়মিত ব্যবস্থা।
বিদেশি স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড চার্চার্ড ব্যাংক একে অন্যের মধ্যে একীভূত হয়েছে বহু বছর আগে। এই প্রক্রিয়া একটি ভালো উদ্যোগ বলেই মনে হয়। কিন্তু যে সব ব্যাংক দুর্বল, তাদের দক্ষতার ঘাটতি পূরণ করা হলেই কিন্তু এ সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। কিন্তু সরকার সে পথে না গিয়ে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে অদক্ষ কর্মীরা ছাঁটাই হবেন নিঃসন্দেহে। কাজের সংকটের এই কালে কর্মী ছাঁটাই কতটা সুখকর হবে তা ভেবে দেখা দরকার।