পারিবারিকভাবে ঠিক করা হোক কিংবা প্রেমের, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় আংটিবদল দিয়ে। অথচ কয়েক বছর আগেও আংটিবদলের আয়োজনটি নিয়ে বিশেষ ভাবনা দেখা যেত না এ দেশে। বেশির ভাগ সময়ই আংটিবদল হতো খুবই ঘরোয়াভাবে। কনে দেখার যে আয়োজন হতো, সেখানেই আংটি পরিয়ে দিতেন গুরুজন ধরনের কেউ। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এখানেও এসেছে নতুনত্ব। আংটিবদল এখন বসার ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। অনেক মানুষ নিয়ে মহাসমারোহে আয়োজন করা হয় আংটিবদলের অনুষ্ঠান। আজকাল তো বিয়ের অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্ব হয়ে উঠেছে আংটিবদল পর্বটি। কিন্তু কীভাবে এল বিয়েতে আংটিবদলের রীতি? কেন বাঁ হাতের অনামিকায় পরানো হয় বিয়ের আংটি?
যেভাবে এল আংটি
আংটিবদলের আংটি সব বিবাহিত জুটির কাছেই বেশ আবেগঘন একটি গয়না। এই আংটির হাতবদল দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে দুজনের একসঙ্গে পথচলার ঘোষণা আসে। শুধু উপমহাদেশে নয়, পুরো বিশ্বেই রয়েছে আংটিবদলের রীতিনীতি। এর সূচনা হয়েছিল প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতায়। প্রায় একই সময় রোমেও ছিল আংটি পরার চল। তবে দুই সভ্যতায় আংটিকে দেখা হতো পুরোপুরি ভিন্ন রূপে। মিসরীয় সভ্যতায় আংটি ছিল সুস্বাস্থ্যের প্রতীক। তাদের বিশ্বাস ছিল, ‘ভেনা অ্যামোরিয়াস’ অর্থাৎ প্রেমের শিরা বাঁ হাতের অনামিকা থেকে হৃৎপিণ্ডে গিয়ে ঠেকেছে। অর্থাৎ বাঁ হাতের অনামিকায় আংটি পরানোর মাধ্যমে একেবারে হৃদয়ে গিয়ে পৌঁছে। হাতের আংটি গোল করার চলও তারাই করেছে। শুধু হাতের আঙুলের সঙ্গে মানানসই বলে নয়, গোল করার পেছনেও ছিল তাদের নিজস্ব ব্যাখ্যা। প্রতিটি আকৃতি যেমন ত্রিভুজ বা চতুর্ভুজেরই শুরু ও শেষ থাকে। একমাত্র বৃত্তেরই শুরু বা শেষ নেই। তেমনিভাবে কারও অনামিকায় আংটি পরিয়ে দেওয়ার অর্থ হলো, অন্ততকাল ধরে তাঁর হৃদয়ে নিজের অবস্থান স্থায়ী করে নেওয়া।